পঞ্চগড়ের সোনাপাতা এলাকার শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়কে গলা কেটে হত্যা মামলায় শীর্ষ জঙ্গি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধীসহ (৩০) চারজনের ফাঁসি আদেশ দিয়েছেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন, রাজিবুল ইসলাম (৩০), আলমগীর হোসেন (৩৫) ও রমজান আলী (২২)। তাদের মধ্যে রাজিবুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
রোববার (১৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) এন্তাজুল হক বাবু বার্তা২৪.কম-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ৪ জনের সাজা হয়েছে। তাদের মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে অপর দুইটি মামলার একটিতে পাঁচ বছর ও অপরটিতে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও উভয় মামলায় পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পিপি এন্তাজুল হক বলেন, রায়ে মামলার অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে হারেজ আলী ও খলিলুর রহমানকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। আর খালাসপ্রাপ্ত অপরজন সাইদুল ইসলাম পালাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলা সদরের চীন-মৈত্রী সেতু সংলগ্ন সোনাপাতা এলাকায় পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়কে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন একই মঠের আরেক সেবক। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ রায়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরও দু’টি মামলা দায়ের করে দেবিগঞ্জ থানা পুলিশ।
পরে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ১০ আসামির মধ্যে ৪ জন বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
এদিকে, মামলার আসামি জেএমবির শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী, আলমগীর হোসেন, রমজান আলী, খলিলুর রহমান ও হারেস আলী জেলহাজতে ছিলেন। আর সাইদুল ইসলাম রানা নামে অপর একজন আসামি পলাতক। তবে পলাতক আসামি রানা ও জেলহাজতে থাকাদের মধ্যে হারেস আলী এবং খলিলুর রহমানকে বেকসুর খালাস পাওয়ায় তাদেরকে কারামুক্তি দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।