দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জ্বর, সর্দি-কাঁশি নিয়ে মসজিদ বা অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে না যেতে অনুরোধ করেছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক।
নির্দেশনা উপেক্ষা করে কেউ মসজিদ কিম্বা ধর্মীয় উপাসনালয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এমন নির্দেশনা জারি করেন হামিদুল হক।
একই সাথে বাড়িতে সঙ্গরোধে (হোম কোয়ারেন্টাইন) থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতে থাকার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনার কথাও জানান জেলা প্রশাসক।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে আমরা জেলার সকল বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছি। রাজশাহীর পদ্মার আই-বাঁধ, টি-বাঁধ, পুঠিয়া রাজবাড়িতে পর্যটকদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, শুক্রবার পবিত্র জুম্মা মুবারক। আমরা মুসলমানরা এ দিনটাতে সবাই মসজিদে গিয়ে একসাথে নামাজ পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বে যে পরিস্থিতি তাতে ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করেই আমাদের কিছু কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য বৃহৎ স্বার্থে যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন এবং সর্দি-জ্বর বা করোনাভাইরাসের সিম্পটম রয়েছে এমন রোগে ভুগছেন, তারা মসজিদ এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে না গিয়ে বাড়িতে অবস্থান করুন।
কোচিং ও প্রাইভেট সেন্টার বন্ধ করা হলেও গোপনে সেগুলো চালানো হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সকল অভিভাবকদের প্রতি সরকারের প্রতিনিধিদের আহ্বান- আপনারা সন্তানদের কোচিংয়ে পাঠাবেন না। তারপরও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা না মেনে চলে তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে বিদেশফেরত ১৮৩ জনকে বাড়িতে সঙ্গরোধে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ১৬ জন, নওগাঁয় ৪১ জন, নাটোরে ৯ জন, জয়পুরহাটে ১৭ জন, বগুড়ায় ৩৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৩৬ জন ও পাবনায় ৩০ জন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে আহ্বায়ক এবং প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএফএম আঞ্জুমান আরা বেগমকে সদস্য সচিব করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার সকল রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। তবে যে বাসগুলো ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহীতে ঢুকেছিল, রাতে সেগুলো পুনরায় গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
শুক্রবার (২০ মার্চ) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার আর কোনো বাস চলাচল করবে না।