বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি আর বাংলাদেশের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। ঐতিহাসিক এ বাড়ি শুধু বঙ্গবন্ধুর নয়, এ বাড়ি বাঙালির। হাজারো স্মৃতির আতুর ঘর বত্রিশ। এটিই বাঙালির ঠিকানা। জাতির জনকের ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়িটি এখন রংপুরে।
রংপুর সার্কিট হাউসের মূল ফটক পার হয়ে ডান দিকে তাকালেই চোখে পড়বে বাসা নং-৬৭৭, ধানমন্ডি-৩২। বাড়ির সামনের উঠানে শোভাবর্ধনে লাগানো হয়েছে বাহারি গাছ। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক কথামালার চিত্র। বাঙালির অনুপ্রেরণা আর সাহস জোগানো সব প্রতিচ্ছবি ইশারা করছে দর্শনার্থীদের।
সাত মার্চের ঐতিহাসিক ক্ষণ আর চিত্র দেখতে দেখতে বাড়ির ভিতরে গেলে মনে হবে এটি সত্যি ধানমন্ডির সেই বত্রিশ নম্বর বাড়ি। যেখানে সাজানো আছে বঙ্গবন্ধুময় সব স্মৃতি। এই বাড়ির দেয়াল জুড়ে বাঙালির ঐতিহাসিক কিছু মুহূর্ত ফ্রেমে বন্দি আছে। আছে বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন সংগ্রাম আর পারিবারিক স্মৃতি।
দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাতের লেখা চিঠি। কতটা দরদ, মমতা আর দেশপ্রেম ছিল ক্ষণজন্মা এই মহান নেতার। তা চিঠির ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে। এই বাড়ির সেলফে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনগল্প নিয়ে বিভিন্ন লেখকের বই। আছে মুজিব কোর্ট, চশমা ও সিগারেট খাওয়া সেই পাইপটিও।
বাড়ির ভেতরে ভাসছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক উচ্চারণ। রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক এই মানুষের জীবনকর্ম কেমন ছিল, তার একটু আঁচ এ বাড়ি দেখলে জানা সম্ভব। অসংখ্য দুর্লভ ছবি ও তথ্য সমৃদ্ধ বাড়িতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিশেষ মুহূর্তের ১১৮টি ছবি।
এখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ১০টি চিঠি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সেলফি বুথ, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের একটি ডামি, বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর বিভিন্ন লেখকের লেখা ৯৯টি বই। রয়েছে হাতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর বড় আকারের ছবি। ধানমন্ডির বত্রিশের আদলে গড়া ঘরটি সাজ-সজ্জার দায়িত্ব পালন করেছে এক্সপ্লোর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।
রংপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গণপূর্ত বিভাগ এর অর্থায়ন করেছে। এই ঐতিহাসিক বাড়ি বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশকে জানার এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। যারা ঢাকার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যেতে পারেননি তারা এ ছবি প্রদর্শনীতে এসে জাদুঘর কেমন, তাতে কি কি রয়েছে তা দেখতে পারবেন।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে এই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে আলোকচিত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্ম ও বিশেষ মুহূর্তগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ৩১ মার্চ শেষ হবে।