করোনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জিডিপিতে: সিপিডি

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-16 04:23:04

কোনো কারণ ছাড়াই ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। আর করোনার কারণে সংখ্যা আর বেশি হবে। তার কারণ আমদানি-রফতানিতে দেশের অর্থনীতির সকল সেক্টরে নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে।

শনিবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

তিনি করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব ঝুঁকির পর্যালোচনা এবং সম্ভাব্য করণীয় তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ ফেলো তৌফিক ইসলাম খান, বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ও সিনিয়র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সিপিডি মনে করে করোনাভাইরাসের ফলে সারা বিশ্বে আমদানি-রফতানি স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী রেভিনিউ, ব্যবসা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগও কমে গেছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এর মধ্যে করোনার কারণে বাংলাদেশে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ অনিশ্চয়তা হয়ে পড়েছে। সরকারি ব্যয়ে প্রেসার পড়ছে। অর্থনীতি কর্মকাণ্ড কমেছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভাটা পড়েছে আর তাতে সরবরাহ কমে যাচ্ছে ফলে নিত্য প্রয়োজনী পণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। উচ্চ থেকে শুরু করে মধ্যম ও নিম্নআয়ের মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। তাতে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি দেশি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না।

দেশের জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে উল্লেখ্য করে ফাহমিদা বলেন, করোনার অবস্থার কথা এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। এটি যত দীর্ঘ হবে দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ গত ৮ মাস ধরে দেশের আমদানি-রফতানি নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। আর নতুন করে করোনাভাইরাসের কারণে এই দেশেগুলোর সঙ্গে আমদানি-রফতানির গতি ধীর হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সরকারকে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে বেশি ব্যয় করতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাড়াতে হবে। আর তাতে মেগা প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাচ্ছে। সরকার ব্যয় করতে পারছে না।

শুধু তাই নয়, গত বছর সরকার যে রাজস্ব আহরণের টার্গেট নিয়েছিলো তার ৮৭ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি ছিলো। এবার আমদানি-রফতানি ও ব্যবসার গতি ধীর হয়ে যাওয়ায় রাজস্ব আহরণের ঘাটতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যদিও করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রয়োজন পড়বে বিপুল বাড়তি টাকা। তাই দুর্নীতি, অর্থপাচার ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধের সময় এখনই।

করোনায় কত কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে তা এখনই পূর্বানুমান করতে পারছে না সিপিডি। তবে রফতানি-আমদানি ও রেমিটেন্স কমায় অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রতিষ্ঠানটির। তার জেরে কমবে মানুষের আয়। এমনকি বেকার হবেন অনেকেই। ফলে সরকারের আয়ও কমবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই অবস্থা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ছোট ব্যবসায়ীরা। সুতরাং করোনার প্রভাব থেকে উত্তোলনে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বড় বড় খাতে না দিয়ে পুনর্বিন্যাস করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি সেক্টরে দিতে হবে। পাশাপাশি বড় বড় খাতগুলোকে মুদ্রানীতির মাধ্যমে সহায়তা দিতে হবে। ব্যাংকখাতে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে হবে। বন্ড, টেজারি বন্ড এবং প্রয়োজনে ব্যাংকের সুদহার কমাতো হবে।

এতে বলা হয়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ভাইরাসটি বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে মহামারির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর