করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে খুলনায় দিনের বেলায় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না। খুলনায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত না হলেও মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারমুখী মানুষের চাপ দেখা যায়।
শনিবার (২১ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ও সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা ডাকবাংলা মোড় ও পিকচার প্যালেস মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় লোকসংখ্যা অনেক কম। প্রায় একই চিত্র নগরীর রয়্যাল মোড়, সাতরাস্তা মোড়, ফেরিঘাট মোড়, ময়লাপোতা মোড়, শিববাড়ী মোড়, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, গল্লামারী, দৌলতপুর কলেজ মোড়, মুহসীন মোড় ও রেলিগেট মোড় এলাকায়।
তবে নগরীর বড়বাজারের চিত্র আবার ভিন্ন। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, বাস কাউন্টারগুলো যাত্রী শুন্য। যাত্রীদের ভিড় না থাকার কারণে কাউন্টারে দায়িত্বরত লোকজন প্রায় অলস সময় কাটাচ্ছেন।
সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারের বুকিং ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন জানান, গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় ৪০ সিটের একটি বাস খুলনা থেকে ২৯ জন যাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এছাড়া শুক্রবার রাত ৯টার বাসে ২৪ জন, সোয়া ৯টার বাসে ১৭ জন, পৌনে ১০ টার বাসে ১২ জন, ১০টার বাসে ১৬ জন ও রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২০জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে ঢাকা থেকে একটি বাসে ৪২ জন থেকে ৪৫ জন যাত্রী এসেছে। প্রতিটি বাসেই নির্ধারিত সিটের চেয়ে দু’জন থেকে পাঁচজন বেশি এসেছে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে খুলনা রুটে যাত্রীর সংখ্যা বেশি।
ইসমাইল আরও জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ২১ মার্চের বাসের কোনো টিকিট বিক্রি হয়নি। সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হবে কী না তাও জানি না। এ রকম হলে ফাঁকা বাসই ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়তে হবে।
খুলনা ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তাদের কাউন্টার থেকে ৪০ সিটের একটি বাস ২৫ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টায় অপর একটি বাস মাত্র তিনজন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঈগল পরিবহনের একটি বাস রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ২৯ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দেয়। এছাড়া রাত সাড়ে ৮টায় ১৯ জন ও রাত ১০টায় ১৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তিনি জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাত সাড়ে ১০টার গাড়িতে মাত্র দুটি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এমন অবস্থা থাকলে বাস বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কর্তৃপক্ষের উপায় থাকবে না।
গ্রিন লাইন পরিবহনের সেলস অপারেটর শহীদুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই দিনের বাসের কোনো টিকিট বিক্রি হয়নি। তবে, শুক্রবার রাত ৯টার বাসে ১৩ জন, সাড়ে ৯টার বাসে ৮ জন ও ১০টার বাসে ১১ জন যাত্রী খুলনা থেকে ঢাকায় গেছে।
অপরদিকে শনিবার ভোরে গ্রিন লাইনের একটি বাস মাত্র ৬ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে খুলনায় এসেছে।