করোনাভাইরাস কী? মাস্ক কেন ব্যবহার করতে হয়? সঙ্গরোধ (হোম কোয়ারান্টাইন) কী? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর জানেন না বরিশাল নগরীর ৩৫ বস্তিবাসী৷ কিছু বস্তিবাসী এটা সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান রাখলেও অন্যদের সাথে এটি নিয়ে তেমন আলোচনা করেন না।
অসচেতনতা আর বসবাসের সঙ্কট থাকায় নিম্নআয়ের মানুষগুলো করোনাঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছেন। সরকারি বা কোনো এনজিও সংস্থা থেকেও নেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় কোনো উদ্যোগ।
বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ডে ১৩টি, ১০ নং ওয়ার্ডে ৮টি, ৬ নং ওয়ার্ডে ৫টি, ৩ নং ওয়ার্ডে ৫টি এবং ২ নং ওয়ার্ডে ৪টিবস্তিসহ মোট ৩৫টি বস্তি রয়েছে। এসব বস্তিতে কয়েক লাখ হতদরিদ্র মানুষ বসবাস করছে৷ এরমধ্যে, পলাশপুর, রসুলপুর, কেডিসি, ভাটারখাল, বঙ্গবন্ধু কলোনি, স্টেডিয়াম বস্তি ও কলাপট্টি বস্তিতেই গাদাগাদি করে সব চাইতে বসবাস বেশি।
আব্দুল জলিল নামে বঙ্গবন্ধু কলোনির এক বাসিন্দা বার্তা২৪.কম কে বলেন, খালি শুনি করোনা করোনা কিন্তু করোনা কি বা এর ক্ষতি কি কিছুই জানি না, কিসের কারণে মাস্ক ব্যবহার করতে হয় তাও জানি না। আর এ সম্পর্কে জানাতে বস্তিতে সরকার বা কোন সংস্থার লোক আসেনি। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানসহ ৯ জনকে নিয়ে একটি ছোট্ট ঘরে গাদাগাদি করে কোনো রকমের খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।
রসুলপুর বস্তির বাসিন্দা আলেয়া বেগম বার্তা২৪.কম কে জানান, করোনা সম্পর্কে পাশের ঘরের টিভিতে দেখছি। খালি মানুষ মরছে৷ আর আলাদা আলাদা জায়গায় থাকছে৷ একজনের অইলে আরেক জনেরও অয়। এ বস্তিতে সবার পাশাপাশি ঘর৷ প্রায় ঘরেই ৭/৮ জন করে মিলেমিশে থাকছে। এখন বস্তির মধ্যে একজনের অইলেই মোগো আল্লাহ ছাড়া কেই বাঁচাতে পারবে না। টাহা পয়সাও নাই যে ডাক্তার দেহামু।
আভাসের নির্বাহী পরিচালক রাহিমা সুলতানা কাজল বার্তা২৪.কম কে জানান, রসুলপুরসহ বেশ কয়েকটি বস্তিতে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বস্তি এলাকার স্কুলগুলোতে বন্ধের আগে শিক্ষার্থীদের মাঝে করোনাভাইরাস সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের সাথে আলোচনা করে৷ দুই একদিনে মধ্যে বস্তিতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পণ্য বিতরণ করা হবে বলেও জানান এই উন্নয়ন কর্মী।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনার প্রতিরোধে বস্তিবাসীসহ সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন। লিফলেট বিতরণ, সঙ্গরোধে (হোম কোয়ারেন্টাইন) না থাকলে নিয়মিত মোবাইলকোর্ট অভিযানসহ বেশি দামে মাস্ক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।