রংপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় এখনো করা হয়নি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গরোধের স্থান। ২০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুতের কথা বলা হলেও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রয়েছে মাত্র তিনটি বেড। আর তিনজন চিকিৎসক ও পাঁচজন নার্সের নাম রেজিস্ট্রারে লেখা হলেও এখন পর্যন্ত কেউই ওই ইউনিটে যোগদান করেননি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের দাবি তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর নগরীর সদর হাসপাতালের পাশে নবনির্মিত ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতালে টানানো হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড লেখা একটি ব্যানার। বাইরে থেকে সুসজ্জিত কিন্তু ভবনের ভেতরের চিত্র ঠিক উল্টো। ভবনের সবকটি কক্ষই ধুলোবালির আস্তরে ঢেকে আছে। সেখানে কাজে ব্যস্ত নির্মাণ শ্রমিকরা। এখানে ২০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারের কথা বলা হলেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে মাত্র তিনটি বেড। তাও পড়ে আছে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে।
করোনা আক্রান্ত কিংবা সন্দেহে আগত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আপাতত শিশু হাসপাতালটি রংপুর বিভাগের সব থেকে বড় আইসোলেশন সেন্টার ধরা হচ্ছে। কিন্তু এখানে নেই কোনো ডাক্তার কিংবা নার্স। করোনা পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি, কিট বা স্ক্যানার মেশিন এসবের কিছুই নেই। খোলা হয়নি কন্ট্রোল রুম কিংবা বিশেষ সেল। যেন স্বাস্থ্য বিভাগ আর সিভিল সার্জনের মুখের কথাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে প্রস্তুতি নামক শব্দটি। বাস্তবে কথা কাজে উল্টো চিত্র।
এই হাসপাতালটি ছাড়াও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে আলাদাভাবে একটি করোনা ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। সেখানে পাঁচটি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগরীর একটু দূরে হারাগাছে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালেও রয়েছে মাত্র তিন বেডের আইসোলেশন সেন্টার। তবে সেখানে করোনা সংক্রান্ত কোনো রোগী এলে চিকিৎসা কোন ডাক্তার করবে এমন নির্দেশনা নেই।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরে করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী এলে তাকে শনাক্ত করতে ঢাকার আইইডসিআর’র রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অনুমান নির্ভর চিকিৎসা চলবে।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রংপুর শিশু হাসপাতাল ছাড়াও জেলার আটটি উপজেলাতে পাঁচ বেডের একটি করে আলাদা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর জন্য তিনজন চিকিৎসক ও পাঁচ জন নার্স দায়িত্বে রয়েছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখার জন্য ১০ সদস্যের একটি আলাদা মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে রংপুরে কোথাও করোনার সন্দেহভাজন কোনো রোগী নেই। বিদেশ ফেরতদের বাড়িতে সঙ্গেরোধে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে হারাগাছের ৩১ শয্যা হাসপাতাল, রংপুর যুব উন্নয়নের হোস্টেল ভবন এবং পুরো শিশু হাসপাতালটি ব্যবহার করা হবে।’