বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রথম প্রতিরোধ হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। কিন্তু প্রতিদিনকার প্রয়োজনের তাগিদে সেটি সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রয়োজনে ওষুধ কিংবা মুদি দোকানে গেলে মানুষের সংস্পর্শে আসতেই হয় এবং তৈরি হয় করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। সেই চিন্তা করে দোকানে সাদা রঙের বৃত্ত এঁকে দিচ্ছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুরে নগরের দুর্গাবাড়ি রোড ও চরপাড়া এলাকায় ওষুধের দোকানগুলোর সামনে এ গোল বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামানের নির্দেশে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-আমীন এ কাজ তদারক করেন।
আল-আমীন বলেন, ‘ওই দুই এলাকার শতাধিক ওষুধের দোকানের সামনে তিন ফুট দূরত্ব রেখে বৃত্ত এঁকে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে ক্রেতারা এসে দোকানের সামনে গোল বৃত্তের মধ্যে থাকবেন এবং একটি বৃত্ত ফাঁকা হলে আরেকজন খালি বৃত্তের মধ্যে দাঁড়াবেন। এতে করে সবার ক্ষেত্রেই করোনা ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে।’
দুর্গাবাড়ি এলাকার পণ্ডিত ফার্মেসির মালিক সুন্দন চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, ‘এটি খুবই ভাল উদ্যোগ। আমাদের সবার মধ্যে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমাদের বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। তাই এ উদ্যোগের ফলে ক্রেতারা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে দোকানে ঢুকতে পারবেন।’
পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় ও দোকানে আসা ক্রেতারাও। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা আরও বাড়বে বলেও মনে করেন তারা। মাহমুদ হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আমি আমার মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে এসে এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে প্রথমে অবাক হলেও পরে গোলাকার বৃত্তের ভেতর দাঁড়িয়ে কিনতে পেরে ভাল লাগছে। এভাবে দূরত্ব তৈরি করে দেয়ায় লোকজনের মাঝে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা কম থাকবে।’
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এ ধরনের সামাজিক নিরাপদ দূরত্বে এভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহতা হতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। প্রথম দিনে ওষুধের দোকানগুলোর সামনে বৃত্ত আঁকা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকার জরুরি পণ্যের দোকানগুলোর সামনেও বৃত্তাকার স্থান চিহ্নিত করা হবে। তাহলে দোকানের সামনে অযথা ভিড় হবে না। সেইসাথে সকল উপজেলাতে এটি করতে নির্দেশনা দেয়া হবে।’