ঢাকা: সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছে মোটর শ্রমিকরা। ফলে রাজধানীর সড়কে গণপরিবহনের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
এ পরিস্থিতিতে রাজধানীতে চলাচলে এখন তাহলে উপায় কী? প্রাইভেট কার ভাড়া করার সাধ্য কজনেরইবা আছে! এমনঅবস্থায় জরুরি কাজের জন্য অনেকের কাছে রাইডশেয়ারিং সার্ভিসেই ভরসা। কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে মোটরসাইকেল বা প্রাইভেটকারও পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে দুই একটি পাওয়া গেলেও ভাড়া নিচ্ছে দ্বিগুণ।
সংকটের এই মুহূর্তে অ্যাপেই বলে দিচ্ছে ভাড়া উঠানামা করবে। কিন্তু সরকার রাইড শেয়ারিং যে নীতিমালা করছে তাতে স্পষ্টবলা আছে, ভাড়ার অগ্রিম ধারণা দিতে হবে যাত্রীকে। কোম্পানিগুলো মূল ভাড়ার পাশাপাশি বাড়তি ভাড়ার বিষয়টিও জানিয়ে দিচ্ছে যাত্রীদের।
অভিযোগ উঠেছে জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পাঠাও এবং উবার’র বিরুদ্ধে। এই দুটি অ্যাপে বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। নীতমালা মানলে এমনটি হওয়ার কথা না বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করায় সম্প্রতি এদুটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়নি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি(বিআরটিএ)। নীতিমালার শর্ত মানলে তাদের অনুমোদন দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি। তারপরও সড়কে পরিবহন সংকট ও ধর্মঘট পুঁজি করে বাড়তি ভাড়ার বাণিজ্য করছে উবার-পাঠাও।
উবার অ্যাপে ইস্কাটন থেকে বসুন্ধরা আবাসিকের ভাড়া দেখাচ্ছে ৭০০ টাকা। যেখানে অন্যসময় সাড়ে ৩শ থেকে ৪ শ।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় উবার পাঠাও খুঁজতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগোযোগ গ্রুপগুলোতেও একই আলোচনা লক্ষ্য করা গেছে। বাড়তি ভাড়া নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই দুটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানির বিরুদ্ধে।
যাত্রা শুরুর পর পাঠাও’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হোসেন মো. ইলিয়াস এ প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, তাদের টার্গেট সিএনজি ভাড়ার অর্ধেক ভাড়ায় নগরবাসীদের সেবা দেওয়া। কিন্তু এখন নির্দিষ্ট দুরত্বে পাঠাও’র মোটরসাইকেলের ভাড়া সিএনজি ভাড়ার দ্বিগুণ হতে চলছে।
আর বরাবরের মতো উবার প্রাইভেট কারের চেয়ে পাঠাও কারের ভাড়া বেশি বলে অভিযোগ ব্যবহারকারীদের। ডিসকাউন্ট কোড দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছাড় দিলেও সেটি থাকছে সীমিত সময়ের জন্য।
শামসুন্নাহার নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী বলেন, ‘আগে উবারে ডিসকাউন্ট কোড থাকতো প্রায়ই এখন পাঠাও-এ দেখা যায়। কিন্তু এটা তো সাময়িক সময়ের জন্য দেওয়া হয়। পরে আবার সেই বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় উবার পাঠাও এটা করছে বলে মনে করেন শামসুন্নাহার।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবাদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে পাঠাও-উবারে যাত্রী বেড়ে গেছে। অনেক জায়গায় পিক আওয়ারে কোন পাঠাও- উবারও মিলছে না।
পাঠাও সংশ্লিষ্ট এক জরিপের তথ্যে, পাঠাও দিনে রাজধানীতে ২০ থেকে ৩০ হাজার ট্রিপ রাইড শেয়ারিং করছে। সমপরিমাণ রাইড শেয়ারিং ট্রিপ হচ্ছে উবারে। এতে কয়েক হাজার যাত্রী দিনে ঢাকা শহরে চলাচলে এসব অ্যাপ ব্যবহার করছেন।
পাঠাও এর আইকনিক ও উবারের সাবেক টপ ড্রাইভার পাটনার সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কম কে বলেন, ‘ আন্দোলনের এই সময়টাতে কিছু কিছু স্থানে বাড়তি ভাড়া আসছে- বলে অভিযোগ পেয়েছি।’
এদিকে, সহসা রাজধানীতে পরিবহন সংকট কাটবে না এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলো।
তাদের ভাষায়, ছাত্ররা যেদিন থেকে রাস্তায় নামবে না সেদিন থেকে সড়কে গাড়ি আগের মতো চলবে।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নাইট কোচেও হামলার ঘটনা ঘটছে। এ পযন্ত ৪০০ গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। নিরাপত্তা না পেলে গাড়ি চালাতে পারছেন না তারা।