সমাজে এমনিতেই অবহেলিত হিজড়া সম্প্রদায়। তার ওপর দীর্ঘ দিন রাজধানীসহ পুরো দেশের সমস্ত কিছু বন্ধ। তাই জীবন রক্ষা করা দূরহ হয়ে পড়েছে তৃতীয় লিঙ্গের এই অবহেলিত সম্প্রদায়ের। তাদের জীবন জীবিকার কথা চিন্তা করে এবার মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
শনিবার (৪ এপ্রিল) উত্তরা ১৩ নং সেক্টরের খেলার মাঠে সবাই মিলে সবার ঢাকা প্ল্যাটফর্ম থেকে হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। মেয়র নিজে উপস্থিত থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শৃঙ্খলার মাধ্যমে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথি ও স্থানীয় লোকজনকে তিন ফুট দূরে দূরে গোল বৃত্ত করে দেওয়া হয়। যারা ত্রাণ নিতে আসছেন তারাও তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কোনভাবেই যেন সামাজিক দূরত্ব ভঙ্গ না করা হয় সেদিক মেয়র সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনার তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি বেসরকারি সকল পর্যায় থেকে বলা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। আমরা সবাই নিয়ম মেনে চলবো, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলবো। এই সংকটকালীন সময় এগুলো মেনে চলতেই হবে। নিয়মিত হাত ধুতে হবেই।
তিনি বলেন, এই শহরকে এই দেশকে বাঁচাতে হলে নিয়ম মেনে চলতে হবে। কেউ ভিড় করবেন না। আপনাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় প্যাকেট রাখা আছে, প্রত্যেকে একটি করে প্যাকেট নিয়ে যাবেন। এখানে প্রতীকী হিসেবে কিছু প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে, এরপর ৫০০ পরিবারের প্রত্যেকের ঘরে এই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে যাবে।
মেয়র বলেন, এই সমাজে প্রত্যেকের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অন্য সাধারণ মানুষের মতো আপনারা সুন্দরভাবে বাঁচবেন। আমরা চাই সকলেই সুন্দরভাবে বেঁচে থাকুক। আমরা সকলে মিলে সবার ঢাকা গড়ব। এজন্য এই উদ্যোগ। সবাই মিলে সবার ঢাকা। তবে তিনি সবাইকে সর্তক করে দিয়ে বলেছেন, কেউ গুজবে কান দেবেন না।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে দেখা যায়, মেয়র পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তিন ফুট দূরত্বে একটি করে প্যাকেট রাখা হয়েছে। সেখানে চাল, ডাল, আলু, সাবান ও তেল রয়েছে। একজন একজন করে সারিবদ্ধভাবে আসছেন আর প্যাকেট নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ কারো হাতে তুলে দিচ্ছেন না। এভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিতরণ অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
এ বিষয়ে মেয়র বলেন, আমরা নিজেরা বলছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। কিন্তু আমরাই যদি না মানি তাহলে কিভাবে অন্যকে বলবো। তাই আমি সবার দূরত্ব নিশ্চিত করেই ত্রাণ দিয়েছি। কমিউনিটির মাধ্যমে যেন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পরে সেজন্যই এই উদ্যোগ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) এবং উত্তরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলর শরিফ উদ্দিন, ডিএনসিসি’র কর্মকর্তা বৃন্দ।