বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে দেশেও। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে ছোট-বড় সব অপরাধ। যার ফলে কারাগারে নতুন আসামির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমে গেছে।
তবে পুরোনো যে বন্দীরা আছে তারাই কারাগারে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ। তাদের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই বিচারাধীন মামলার আসামি। ছোট খাটো অপরাধের অভিযোগেও অনেকে বছরের পর বছর ধরে আটকে আছেন।
করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে কারাগারগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এমন আশঙ্কায় বন্দী মুক্তির এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
আলোচনা হচ্ছে লঘু অপরাধে কম দণ্ডপ্রাপ্ত এবং যাদের তিন ভাগের দুই ভাগ সাজা শেষ হয়েছে। এ ধরনের আসামিদের বাছাই করে মুক্তি দেওয়া।
সর্বশেষ সোমবার (৬ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নিজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা জেলে আছেন এবং হত্যা, ধর্ষণ ও অ্যাসিড মামলার আসামি নয় কিন্তু ইতোমধ্যে বহুদিন জেল খেটেছেন এমন কয়েদিদের কীভাবে মুক্তি দেওয়া যায়, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করতে।
প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি ভাবছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ছোট অপরাধে দণ্ডিত দীর্ঘদিনের বন্দীদের মুক্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সব কারাগারের বন্দী ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪ জন। সর্বশেষ মার্চ পর্যন্ত সেখানে আটক ছিলেন ৮৭ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে হাজতি ৬৭ হাজার ৭২১ জন, কয়েদি ১৭ হাজার ৫৫৪ জন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক হাজার ৮৬৮ জন, ৫৪ ধারায় আটক ৮ জন, বিশেষ বন্দী ৩৩ জন, আর/পি বন্দী ৮২ জন।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অপরাধ কমে যাওয়ায়। নতুনভাবে কারাগারে প্রবেশ করা আসামির সংখ্যা বেশি নয়।
কারাগারে এখনকার পরিস্থিতি কেমন জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলা সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এখন আসামি আসার সংখ্যা কমে গেছে। আগে দিনে ২৫০/৩০০ বন্দী আনা হত। এখন ৫০/৬০ জন আসছে।
প্রসঙ্গত কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী এর আগে ২০১০ সালে এক হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।