করোনাভাইরাসের থাবায় বিধ্বস্ত গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে উদ্বেগ।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং তিনজন মারা গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও সরকারি নির্দেশনায় বিভিন্ন সংস্থা কঠোর হচ্ছে।
সঙ্গরোধ মেনে চলার পাশাপাশি যে সকল নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে, তাও পালন করতে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। তবে অনুরোধে কাজ না হওয়ায় কঠোর হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রোববার (৫ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সদরদফতর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, ঢাকার সঙ্গে সমস্ত জেলার যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। পরবর্তী সরকারি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জরুরি সার্ভিস ব্যতীত সাধারণ জনগণ ঢাকায় প্রবেশ অথবা ঢাকা ত্যাগ করতে পারবেন না।
তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ওষুধের দোকান ছাড়া ঢাকার দোকানপাট সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ডিএমপি।
এমনকি সন্ধ্যার পর বাইরে অবস্থান করলে আটক করে থানায় নেওয়া হবে বলেও মাইকিং করে জানান তারা।
শুধু কোন নির্দিষ্ট এলাকা না রাজধানীর প্রায় অধিকাংশ এলাকায় মাইকিং করে বাসা থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (৬ এপ্রিল) বিকাল থেকে রাজধানীর অধিকাংশ পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি মসজিদ থেকে ও স্থানীয়রাও সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম হ্যান্ড মাইক দিয়ে সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করছেন।
তার ৫ মিনিট পর মোহাম্মদপুর থানার একটি টহল টিম সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে ওষুধের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছেন। তারা বলছেন যেহেতু সবকিছু বন্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে অহেতুক কেউ বাসা ছেড়ে বের হবেন না। হলে আইনের আশ্রয় নিতে আমরা বাধ্য হবো।
আবার মসজিদে মসজিদে আজানের আগে সবাইকে ঘরে নামাজ পড়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টের জামে মসজিদে আজানের আগে ও পরে বলা হচ্ছে, ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, আপনারা ঘরে নামাজ পড়েন। কোনোভাবেই কেউ যেন বাসা থেকে বের না হয় সে কথাও জানানো হচ্ছে।
এদিকে দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে আরও কঠোরভাবে সোশ্যাল আইসোলেশন বা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কঠোর হচ্ছি। সামাজিক দ্রুত মানানোর পাশাপাশি যে নির্দেশনা গুলো রয়েছে। তা মেনে চলতে আমরা বাধ্য করছি।
ইতিমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলোও রাজধানীবাসীকে পালন করাতে মাঠে কাজ করছি বলে জানান তিনি।