এ দৃশ্য কোনো ত্রাণ বিতরণের নয়, এটি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ওপেন মার্কেট সিস্টেম (ওএমএস) খাতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল কেনার জন্য মানুষের লাইন। ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করতে গিয়ে বিক্রেতা-ক্রেতা সবাই ভুলে গেলেন সামাজিক দূরত্বের কথা। আর এ বিশৃঙ্খল অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে। এমন ঘটনা লালমনিরহাট শহরের ১২ পয়েন্টে ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার শহরের কলেজ বাজার এলাকার একটি চাল বিক্রয় কেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা যায়। তবে চাল কিনতে আসা লোকজনের দাবি, এমন পরিস্থিতির জন্য ডিলাররা দায়ী।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে নিম্নআয়ের লোকজন কাজে যেতে পারছেন না। এই শ্রেণির লোকজনের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওপেন মার্কেট সিস্টেম (ওএমএস) খাতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করার নির্দেশ দেন। এর পর থেকে ডিলাররা ১২টি পয়েন্টে চাল বিক্রি শুরু করেন। স্থানীয় খাদ্য বিভাগ বিক্রির জন্য ৬ হাজার কেজি চাল বরাদ্দ দেয়। সে হিসেবে একজন ডিলার প্রতি বিক্রয় কেন্দ্রে ৫শ’ কেজি চাল বিক্রি করতে পারবেন। আর এই ৫শ’ কেজি চাল পাবেন ১০০ জন নিম্নআয়ের মানুষ। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
সরজমিনে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল ৬টা থেকে চাল কিরতে লাইন ধরে অপেক্ষায় রয়েছে প্রচুর মানুষ। কিন্তু চাল বিক্রি শেষ হয়ে যাওয়ায় লাইনে থাকা লোকজন বিশৃঙ্খলা শুরু করে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে।
এ সময় চাল কিনতে আসা সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, ডিলারের লোকজন লাইনে দাঁড়াতে বলেছেন, আমরা দাঁড়িয়েছি। সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে তারা কোনো কিছু বলেননি।
চাল না পাওয়া রোকেয়া বেগম বলেন, ১০ টাকা দরে চাল বিক্রির খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় লাইনে দাঁড়িয়েও বিকেল খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। আমারা গরীব মানুষ, আমাদের কপালে সবসময় কষ্টটাই লেখা থাকে।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে জানান, বরাদ্দের চেয়ে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এ সমস্যা থাকবে না বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সরকার ১০ টাকা কেজি দরে নিয়মিত চাল সরবরাহ করছে। জেলায় প্রথম শুরু করা হয়েছে। পর্যায়েক্রমে জেলার ৫টি উপজেলায় চাল বিক্রির কাজ শুরু হবে। লালমনিরহাটে খাদ্যের কোনো সঙ্কট নেই, খাদ্যের অভাব নেই।