করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দুই সপ্তাহ ধরে কার্যত লকডাউনে ঢাকা। আসন্ন পরিস্থিতি বিবেচনায় গত তিন দিন ধরে ওষুধের দোকান বাদে শুধু নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার বা দোকান।
এমন পরিস্থিতিতে সব কিছু বন্ধ থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষদের মাঝে ট্রাকে করে কম দামে নানা পণ্য বিক্রি করছে ট্রেড কর্পোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি)। রাজধানীর নানা মোড়ে ট্রাকে করে এসব পণ্য বিক্রির সময় সেখানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। এ সময় তারা মানছেন না নির্দিষ্ট দূরত্ব।
বুধবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর বসিলা ব্রিজের পূর্ব পাড়ে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য। দুপুর ১টায় সেখানে টিসিবির ট্রাকে চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজসহ নানা ধরনের পণ্য স্বল্প মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছিল। পণ্য কেনার জন্য দীর্ঘ লাইন ও অপেক্ষার সময় ক্রেতারা মানছিলেন না নিরাপদ দূরুত্ব। এতে করে কেউ কেউ আতঙ্কিত হলেও নিরুপায় হয়ে অপেক্ষা করছিলেন সেখানে। করোনা রোধে একে অন্যের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে অর্থাৎ অন্তত তিন ফুট বা আড়াই হাত দূরে অবস্থান করতে হবে।
নিরাপদ দূরুত্ব মানছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর নামে এক ক্রেতা বলেন, প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে লাইনে আছি জিনিস (পণ্য) পামু কি না তার গ্যারান্টি নাই, আর দূরুত্ব দিয়া কি করমু! আমাগো গবিবের সবখানেই বিপদ!
আলী আকবরের কথা শেষ না হতেই এক যুবক বলেন, ব্যাপারটা খুব ভয়াবহ। আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু বুঝেও লাভ নেই। এখানে এমনভাবে ট্রাকটি দাঁড় করিয়েছে যে নিরাপদ দূরুত্বে দাঁড়াতে গেলে ৩০ জনের বেশি মানুষ দাঁড়াতে পারবেন না। অথচ লাইনে তো শত শত মানুষ। সব মিলিয়ে একটা ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছি আমরা। যা কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না। আবার বুঝেও লাভ নাই। কারণ, অব্যাবস্থাপনা সব জায়গাতেই।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত সারাদেশে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ২১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন এবং মারা গেছেন তিনজন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ জন, বাকি ১৫ জন ঢাকার বাইরে। ঢাকায় এ পর্যন্ত মোট ২০০টি বাড়ি এবং ১২টি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।