টাঙ্গাইলে অন্ধ হেকমত ও বৃদ্ধ আলীর কপালে জুটেনি ত্রাণ

, জাতীয়

অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল | 2023-08-28 08:00:17

দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হেকমত আলীর (৫০) সংসারে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছেলের বউ রয়েছে। ছেলে কাজ করতো ওয়ার্কশপে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ওয়ার্কশপ বন্ধ হওয়ায় ছেলেও বেকার। তাই পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন তুলে দিতে তপ্তরোদে বের হয়েছেন ভিক্ষা করতে। কিন্তু রাস্তায় বা বাজারগুলোতে লোকজনের উপস্থিতি কম হওয়ায় ভিক্ষাও তেমন জুটেনি তার। তারপরও হেঁটে যাচ্ছেন কিলোমিটার পর কিলোমিটার সড়ক।

অন্যদিকে মোহাম্মদ আলী (৭৫) স্ত্রী, নাতি এবং ছেলের বউ নিয়ে সংসার। ছেলে মারা গেছে প্রায় ২০ বছর আগে। এই বয়সেও এসে সংসারে হাল ধরতে হয়েছে তার। তিনি পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে বের হয়েছেন ভিক্ষা করতে। সকালে না খেয়ে বের হয়ে দুপুর সময় দোকান থেকে ভিক্ষার টাকায় এক পিচ কেক কিনে খেয়েছেন। বললাম ঘাটাইল উপজেলার পাচঁটিকড়ি গ্রামের হেকমত আলী ও ভূঞাপুর উপজেলার চরঅলোয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর কথা।

অসহায় বৃদ্ধ করোনাভাইরাসের কারণে বাড়িতে থাকলেও ঘরে খাবার না থাকায় বের হয়েছেন ভিক্ষা করতে।

জানা গেল, তারা কেউই এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি। কেউ খোঁজ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।  এজন্য পুনরায় ভিক্ষার পেশায় নেমেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দৃষ্টিহীন হেকমত আলী ভূঞাপুর পৌরসভার ইবরাহীম খাঁ কলেজরোডে তপ্তরোদে লাঠি খুড়িয়ে খুড়িয়ে ভিক্ষা চেয়ে রাস্তায় হাটছে। এরমধ্যে অনেকে তাকে দেখে ভিক্ষা দিচ্ছে আবার অনেকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসে মানুষজন তেমন বাইরে নেই।

তিনি জানান, করোনার কারণে মানুষ রাস্তায় নেই জেনেও সংসারের সদস্যদের পেটে খাবার জোগাড়ের জন্য ভিক্ষায় নেমেছি। অনেকেই দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী পায়নি। আবার ভিক্ষা করেও বেশি উপার্জন হয় না। সারাদিনে যা উপার্জন হয় তাই দিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে সংসার চলছে।

হেকমতের মত মোহাম্মদ আলীও বলেন, সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। এই বৃদ্ধ বয়সে বের হয়েছি নাতির মুখের দিকে তাকিয়ে। ছেলে মারা গেছে বহুত আগেই। কি করোনা নাকি আইছে তাই মানুষ ভিক্ষাও দিচ্ছে না। সকালে বের হয়ে দুপুরে একটা কেক খেয়ে এখনও রাস্তা দিয়ে ঘুরে মানুষজন পেলেই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি ভিক্ষার জন্য। কেউ আমাগোরে ত্রাণ দেয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর