মার্চ মাসের বেতন ৮০ শতাংশ পোশাক শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক।
তিনি বলেন, আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সকল শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হবে। এ পর্যন্ত ৮০ শতাংশ শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে বলে আশা করছি।
রোববার (১২ এপ্রিল) এক বার্তায় সংবাদ মাধ্যমকে এই কথা জানান তিনি।
এদিকে, বেতন-ভাতার জন্য গত এক সপ্তাহে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৬ লাখ ৫ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট চালু করেছে পোশাক শ্রমিকরা বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।
এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্যাকেজ থেকে উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পণ্য রফতানি করছে এমন সচল প্রতিষ্ঠান সুদবিহীন সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হারে সার্ভিসচার্জ দিয়ে ঋণ নিতে পারবে। তবে এ ঋণ দিয়ে শুধু মাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারবে। কোনভাবেই কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা প্রদান করা যাবে না। একই সঙ্গে বেতন সরাসরি শ্রমিকের ব্যাংক বা মোবাইল অ্যাকাউন্টে দিতে হবে।
এ প্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল এ ঋণ সুবিধা নিতে চায় এমন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ২০ এপ্রিলের মধ্যে মোবাইল অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য শ্রমিক অথবা কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন হবে। তবে এই হিসাব খোলার জন্য কোনো ধরনের চার্জ বা ফি কাটা হবে না। সরকার ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা এবং বেতন-ভাতাদি মোবাইলে পৌঁছাতে এ নির্দেশনা দেয় এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এতে করে শ্রমিক ঘরে বসে নিজ নিজ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টেই বেতন-ভাতা পাবেন।
বিজিএমইএর সব শেষ তথ্য বলছে, প্রণোদনার অর্থ পেতে এখন পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৬ লাখ ৫ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেছে পোশাক শ্রমিকরা। এর মধ্যে গত ৪ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত 'বিকাশ' এ নতুন ৩ লাখ ৬০ হাজার নতুন হিসাব এবং 'রকেট' এ ১ লাখ ৬০ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। আর ৬ এপ্রিল থেকে মোবাইল ব্যাংকিং 'নগদ' এ নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেছে ৮৫ হাজার শ্রমিক।
বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত এক সপ্তাহে ৬ লাখের বেশি হিসাব খোলা হয়েছে। যাদের এখনো হিসাব খোলা হয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়েই বাকি কারখানা শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব শেষ হবে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ‘বেতনের অর্থ শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করতে হবে। কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না। যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যাংক হিসাব নেই তাদের মালিক নিজ উদ্যোগে ব্যাংক হিসাব খুলে দেবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চার্জ আরোপ করতে পারবে না।