তাঁত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তামাই গ্রামের একদল যুবক

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 22:51:46

প্রতিদিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, সেই সঙ্গে বাড়ছে সঙ্গরোধ বা লকডাউনের সময়সীমা। কেন না এ করোনা থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র উপায় সঙ্গরোধ বা ঘরে থাকা। সরকার ঘোষিত লকডাউন রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম গ্রামান্তরে। এই ঘোষণায় যারা দিন এনে দিন খেতেন, তারা পড়েছেন মহাসংকটে। ঘর থেকে বের হলে করোনার ভয়, আর ঘরে থাকলে না খেয়ে মরার ভয়।

চাল-ডাল প্যাকেট করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা, ছবি: বার্তা২৪.কম



বিশেষ করে দিনমজুরদের সমস্যা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও শাহাজাদপুরসহ বিভিন্ন তাঁতপল্লীতে করোনার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। করোনার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কারখানা। এতে চরম ক্ষতির মুখে মালিকরা। আর অনাহারে কাটছে খেটে খাওয়া শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জীবন। বেলকুচি থানার তামাই গ্রামে প্রায় ৩৫ হাজার লোকের বসবাস। আর বহিরাগত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। তাদের প্রত্যেকে তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাঁতের কাজেও বাধা এসেছে। আর যে দুই-একটি চালু রয়েছে, মহাজনের ব্যবসা মন্দা, তাই মজুরি ঠিকমত জোটে না। এ অবস্থায় না খেয়ে বা কখনো একবেলা খেয়ে দিন যাচ্ছে তামাই গ্রামের শ্রমিকদের।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, সেখানে এখনো সরকারি কোনো সহায়তা পৌঁছায়নি। এসব দুর্দশাগ্রস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামেরই একদল যুবক। যারা নিজেরা একটু স্বাবলম্বী। তামাই গ্রামের একদল যুবক নিজস্ব অর্থায়নে তিন হাজার পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন।

চাল-ডাল প্যাকেট করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা, ছবি: বার্তা২৪.কম



নিজেরাই প্যাকেট করে খাদ্য দ্রব্য পৌঁছে দিলেন সেই অভুক্ত মানুষদের কাছে। তামাই ক্লাব লিমিটেডের সৌজন্যে তিন হাজার পরিবারের অন্তত পাঁচ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি প্যাকেটে রয়েছে- আট কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল, এক লিটার করে তেল, এক কেজি করে পেঁয়াজ, এক কেজি লবণ ও একটি করে সাবান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় অনুপ্রাণিত হয়ে রিশাদ মোরর্শেদ, ইলিয়াস হোসেন ওয়াসিম, আরাফাত মুসুল্লী, এনামুল কবীর রিফাত মিলে তামাই ক্লাবের পক্ষ থেকে অভুক্ত শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

চাল-ডাল প্যাকেট করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ প্রসঙ্গে রিশাদ মোরর্শেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা বন্ধুরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক অভুক্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সমাজে আরো অনেক বিত্তশালী সম্পদশালী লোক আছেন, তারাও যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে মানুষগুলো অন্তত ডাল, ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবেন। আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে যতটুক সম্ভব এ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

তবে ত্রাণ বিতরণেও একটু ভিন্নতা এনেছেন ওই ‍যুবকরা। সবাই যখন ত্রাণ বিতরণের সময় ফেটোসেশনে ব্যস্ত থাকেন, সেখানে এ যুবকরা যাদের হাতে ত্রাণ দিয়েছেন, তাদের কারো ছবি তোলেননি। যাদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে, তাদের সম্মানের কথা চিন্তা করেই কারো ছবি তোলেননি তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর