ঝিনুক থেকে তৈরি করা চুন গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন আজিরন, আমেনা, ছবেদা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ছুটির কারণে তাদের চুন বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
বগুড়ার শহরতলীর বারপুরের চুনিয়তেপাড়ার চুন বিক্রেতা এই নারীদের ঘরে গত তিন দিন ধরে খাবার নেই। অর্ধাহারে অনাহারে রয়েছে আজিরন, আমেনার মতো শতাধিক নারীর পরিবারের সদস্যরা।
পেটের ক্ষুধায় শতাধিক নারী রাতের আঁধারে নেমে এসেছেন রাস্তায়। তারা অবস্থান নিয়েছেন মাটিডালী এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের সামনে।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ত্রাণ পাওয়ার আশায় উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায় বসে পড়েন তারা।
উপজেলা প্রশাসন তাদের ডাকেনি। তাদের ধারণা উপজেলা পরিষদের সামনে গেলেই মিলবে চাল। আর তা দিয়ে পেটে জুটবে ভাত।
কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাতের অন্ধকারে বসে থেকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে চুন বিক্রেতা ওই নারীদের। এসব নারীদের অধিকাংশই বিধবা।
বার্তা২৪.কমকে তারা জানান, চুন বিক্রি করতে না পারায় তাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে পৌরসভার কাউন্সিলরের কাছে ঘুরেছেন একাধিকবার। কিন্তু এক সের চালও পাননি কেউ। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাতের আঁধারে রাস্তায় নেমেছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ছিলেন উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায়।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বদিউজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেওয়া শতাধিক নারীকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভুক্ত ওই নারীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুর রহমান বলেন, তারা কার কথায় রাতের বেলা এসেছে জানি না। উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে কোন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয় না।
তিনি বলেন, ৫৪০০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। চুনিয়াতেপাড়ার এই পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।