চলছে জাটকা বিক্রির মহোৎসব, ‘চুপচাপ’ প্রশাসন

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-19 21:00:20

পহেলা বৈশাখ মানেই পান্তা ইলিশ। এটি বাঙালিদের ঐতিহ্যও বটে। তবে এবার পহেলা বৈশাখের আনন্দ করোনাভাইরাসের কারণে মাটিচাপা পড়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবার প্রতিটি ঘরেই বৈশাখ উৎসব পালন করা হচ্ছে। আবার জাটকা সংরক্ষণে মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞাও চলছে।

কিন্তু লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন মাছঘাটে দেখা গেছে জাটকা বিক্রির মহোৎসব। মৎস্য বিভাগ আর কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজকেই দোষারোপ করছেন সচেতন মহল।

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে লক্ষ্মীপুরে লকডাউন চলছে। সঙ্গরোধে মানুষজনকে থাকতে বলা হয়েছে। বাজারে গেলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য বলা হয়েছে। হাটবাজার, দোকানের সামনে সুরক্ষা বৃত্তও এঁকে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু কে শুনে কার কথা! 

জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী খাসেরহাট বাজারে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকালের চিত্র ছিল জমে উঠা মেলার মতো। একজনের সঙ্গে অন্যজনের গা লেগে আছে। মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে জাটকার মেলা চলছে। জাটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আর করোনা ক্রান্তিকালে সঙ্গরোধে থাকতে হলেও ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসন এনিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

মেঘনা উপকূলীয় এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনের জাটকা সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল। কিন্তু এখানের চিত্র ভিন্ন। প্রশাসনও চুপচাপ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কোস্টগার্ডের দায়সারা কাজের কারণে চরভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারের তত্ত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেট মাছ শিকারে কাজ করছে। এই সিন্ডিকেটে রায়পুরের মেঘনা নদীর চরগজারিয়া গ্রামের রুবেল মাঝি ও শাহ আলম মাঝি জড়িত রয়েছে। নদীতে মাছ শিকারের পর একটি ভাগ কোস্টগার্ডকে দেয়া হয় বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন।

এ ব্যাপারে এক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা কালীন নদীতে মাছ শিকারের দায়ে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি নদী এলাকার ইউপি প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এ দায়িত্ব কেউই ঠিক মতো পালন করছে না। সবাই দায়সারাভাবে কাজ করছে। চলতি পথে কাউকে মাছ ধরতে দেখা গেলে শুধু তাদের জন্যই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কিন্তু কাউকে খুঁজে পায়নি। জেলেরা ভোরে মাছ বিক্রি করে পালিয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য ইউপি মেম্বার ও চৌকিদারদের নিয়ে বৈঠক করব। চাঁদপুরের চর ভৈরবের রুহুল আমিন মেম্বারসহ একটি সিন্ডিকেটের নৌকা রায়পুরে ঢুকে মাছ শিকার করে বলে জানতে পেরেছি।’

রায়পুরের হায়দরগঞ্জ ক্যাম্পের কন্টিজেন্ট কমান্ডার (সিসি) আবদুর রহমান বলেন, ‘জাটকা সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার নৌকা কখন মাছ শিকার করতে যায়, সেটা আমরা জানি না। অভিযান চালিয়ে যাদেরই নদীতে দেখা যায়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আটক করা হয়। বাজারে জাটকা বিক্রি ও করোনা প্রাদুর্ভাব কমাতে সঙ্গরোধ নিশ্চিতে আমরা ছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের কাজ করার কথা রয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর