ক্ষুধার্ত বেওয়ারিশ কুকুরগুলোর প্রতি ৩ বন্ধুর ভালোবাসা

, জাতীয়

নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও | 2023-08-23 01:14:24

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে প্রায় সব জায়গায় চলছে লকডাউন। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। খুলছে না কোনো খাবার হোটেল। এ কারণে বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়া ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বেওয়ারিশ কুকুরগুলো খুবই কষ্টে আছে। অভুক্ত থাকতে হচ্ছে তাদের।

তবে এসব বেওয়ারিশ কুকুরগুলোর পাশে দাঁড়াতে ঠাকুরগাঁও শহরের ৩ বন্ধু মিলে নিয়েছেন একটি ভিন্ন উদ্যোগ।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় একটি পোস্টার লাগানো দেখা গেছে। দেয়ালে বা খুঁটিতে লাগানো পোস্টারের নিচে রাস্তায় একটি করে বক্স রাখা হয়েছে।

আর পোস্টারে লেখা রয়েছে- আপনার বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো ফেলে না দিয়ে এই বক্সে রাখুন। এতে অন্তত ক্ষুধার্ত কুকুরগুলো কিছু খেতে পারবে। অনাহারে দিন কাটছে এই কুকুরগুলোর। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় প্রায় ১৮০০ থেকে ২ হাজার বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে। এসব কুকুর বিভিন্ন হোটেলের ফেলে দেয়া খাবার খেয়ে বেঁচে থাকত। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে খাবার হোটেলগুলো বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অভুক্ত থাকতে হচ্ছে কুকুরগুলোকে।

দুপুরে শহরের বড় মাঠ এলাকায় বাজার করতে এসেছিলেন হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়নাল। মাঠের প্রবেশ পথে ওই পোস্টারটি দেখেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই খারাপ সময়ে আমরা নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত। কুকুরের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখে আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। এই অবুঝ প্রাণীগুলোর কথা আমাদের সবার চিন্তা করা উচিত।’

শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সকালের দিকে ৩ জন ছেলে এসে বাসার সামনে একটি খুঁটিতে পোস্টার লাগিয়েছেন। যাতে লেখা রয়েছে- আপনার বাসার বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো ফেলে না দিয়ে এই বক্সে রাখুন। এতে অন্তত ক্ষুধার্ত কুকুরগুলো কিছু খেতে পারবে। লেখাটি দেখার পর মনের ভেতর থেকে অন্য রকম এক ভালোবাসা কাজ করছে। তাদের এই মানবিক কাজটিকে ধন্যবাদ জানাই। এখন থেকে আমি আমার বাসার বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো এখানে রেখে যাব। এ বিষয়ে অন্যদের এগিয়ে আসতে অনুরোধ করব।’

বেওয়ারিশ কুকুরগুলোর জন্য ভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা ওই ৩ বন্ধু হলেন- শহরের পূর্ব গোয়ালপাড়া এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে রাকিব আল রিয়াদ, একই এলাকার ফারুকুজ্জামানের ছেলে সোহানুর জামান প্রিন্স ও বিআরটিসি কাউন্টার এলাকার আনিস রহমানের ছেলে জাহিদ হাসান।

তারা বলেন, ‘আমরা ৩ বন্ধু মিলে শহরের এক রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের হাতে একটি পাউরুটির প্যাকেট ছিল। আর এই পাউরুটির প্যাকেট দেখে বেওয়ারিশ কয়েকটি কুকুর আমাদের চারপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে। এই ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে দেখে খুব মায়া হচ্ছিল। পরে আমরা ওদের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেই।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর