ঢাকা: কোমলমতি ছাত্রদের আন্দোলনে যারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে তারা সরকারকে বিব্রত করতে চেয়েছে। এ হামলার মধ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের উসকে দেয়ার পায়তারা করেছে। তারা চায় সরকার ও সাংবাদিকরা মুখোমুখি অবস্থানে থাকুক। এর মধ্য দিয়ে এসব দুর্বৃত্তকারীরা ফায়দা হাসিল করতে চায়।
বৃহস্পতিবার (০৯ আগস্ট) সচিবালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সম্প্রতি রাজধানীতে দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহতের আন্দোলনে সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় এ বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন,‘আমরা আহত সাংবাদিকদের জন্য ইতোমধ্যে চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিয়েছি। তাদের খোঁজখবর সার্বক্ষণিক তথ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে। আজ মিটিং চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বিষয়গুলো অবহিত আছেন। তিনি ব্যবস্থা নিতে আন্তরিক। আগামী শনিবার সারাদেশে সাংবাদিকরা যে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে আমরা আশা করছি তার আগেই দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের বিষয়টির দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেত্রী হিসেবে যেমন সাংবাদিক বান্ধব তেমনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও। আমি মনে করি সাগর-রুনির হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ নেই তাই হয়তো তাদের হত্যার বিচার দেরি হচ্ছে। কিন্তু ছাত্রদের আন্দোলনের মাঝে যারা সাংবাদিকদের হত্যার উদ্দেশে মারধর করেছে তাদের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সবার কাছে পরিষ্কার। ফলে তাদের গ্রেফতার করতে কোনো রকমের দেরি হওয়ার কথা নয়।’
তিনি দাবি তুলে বলেন,‘আমি তথ্যমন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব তারা যেন আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার সব দায় দায়িত্ব নেন। সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়েছে। তাই এই বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় তার দায়িত্ব সাংবাদিকদের অভিবাবক হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।’
বৈঠকে বিএইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, ‘আমরা আগামী শনিবার সারাদেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছি। যদি আপনারা সরকারের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিদের চিকিৎসাভার ও দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার না করেন তাহলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। আর এর ফায়দা নেবে সরকারের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করতে চায় তারা। ফলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সরাসরি হস্তক্ষেপে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়ের উদ্যোগে হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজের সভাপতি আবু জাফর সুর্য্য বলেন, ‘সাংবাদিকরা জানে তাদের অধিকার আদায়ে কীভাবে আন্দোলন করতে হয়। তথ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক আহত সাংবাদিকদের দেখতে হাসপাতালে গেছেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন। আমরা আশা করি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তাছাড়া সাধারণ সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে আমরা রাজপথে যেতে বাধ্য হব।’
বৈঠকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় সাংবাদিকদের খোঁজখবর নিয়েছেন। আমাদের সরকার সংবাদ মাধ্যম বান্ধব। আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে তথ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দাপ্তরিক চিঠি লিখেছে। আপনারা আস্থা রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হামলাকারীদের গ্রেফতার করা হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সদ্য নির্বাচিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন্নাহার প্রমুখ।