'হোলাইন আর বাল-বাইচ্চা লই কষ্টে আছি'

, জাতীয়

হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-23 18:58:53

'কিছু হাইতাছি না, দয়া করে আঙ্গোরে দিবার খেয়াল হইলে, আমনেগো আতে আঙ্গোরে কিছু সাইয্য করেন। আর ঘর-দুয়ারগিন ভাঙি-চুরি হড়ি কি অবস্থা অই গেছে। অন আর হোলাইন আর বাল বাইচ্চা লই কষ্টে আছি। এই হইর্যন্ত একমুঠ, কোনো দিকের কোনো সাইয্য হাই ন। সরকার অনেক কিছু দিতে আছে, কোনো খোঁজ খবর আনরা পাই না। চেয়ারম্যানও কিছু দিতে আইয়ো ন'।

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে ঠিক এভাবেই বার্তা২৪.কমকে দুঃখের কথা জানাচ্ছিলেন করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সূতার গোফ্টা এলাকার বাসিন্দা সফি উল্যা।

জানা গেছে, কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সফি উল্যা। মেঘনা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে সদর উপজেলার সূতার গোফটা এলাকার লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশে বসবাস করছেন। সূতার গোফটা এলাকায় একটি চায়ের দোকান আছে তার। করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দোকানটি এখন বন্ধ আছে। বাড়তি কোনো রোজগার নেই। বড় ছেলে স্থানীয় ক্ষেতে-খামারে দিনমজুরের কাজ করে, কিন্তু করোনার কারণে এখন গৃহবন্দি। উপার্জনহীন এ সংসারটি চালাতে এখন বেশ হিমশিম খাচ্ছে ৭০ বছরের বৃদ্ধ শফি উল্যা।

একই দৃশ্য চোখে পড়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পূর্বপাশে অবস্থান নেওয়া দুই শতাধিক নদী ভাঙা পরিবারগুলোতে। তাদের দুঃখ গোছাতে প্রয়োজন কোনো এক হাতেমতাইয়ের। যিনি করোনার এই সংকটকালে অসহায় মানুষগুলোকে বাঁচানোর জন্য ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিবেন।

জানতে চাইলে শফি উল্যা জানান, সড়কের পাশে অনেক কষ্টে তারা বসবাস করছেন। গাড়ির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাদের। তবুও এটিকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন। করোনা এসে তাদের বিপর্যয় আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ঝড়ে দোকান ও ঘরটিও ভেঙে গেছে। ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম ঘরটি ঠিক করেছেন।

তিনি জানান করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে কেউ যদি তাদের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে খাদ্যের অভাবেই মরতে হবে। করোনার ছোঁয়া লাগবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর