করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুত শতামেক হাসপাতাল

, জাতীয়

মাহমুদুল হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর | 2023-08-24 10:08:41

গাজীপুরে পুলিশ, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিকসহ ৩১৭ জন নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের পর তাদেরসহ বাইরের রোগীদের চিকিৎসা দিতে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ (শতামেক) হাসপাতালের ১০০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে বার্তা২৪.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৬ এপ্রিল এই হাসপাতালকে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণার পর প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। পরে হাসপাতালের সার্বিক প্রস্তুতি, বিভিন্ন বিভাগ বিভাজন ও আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে এক সপ্তাহ সময় লেগেছে। প্রাথমিক অবস্থায় ১০০ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে হাসপাতালটি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।’

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘এরইমধ্যে হাসপাতালটির ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে একাধিক দল গঠন করা হয়েছে। পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, সিস্টার, আয়া, ওয়ার্ডবয় ও ক্লিনার আলাদা দলে ভাগ হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা পর্যায়ক্রমে রুস্টার মাফিক বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাধারে সাতদিন দায়িত্বে থাকবেন। এ সময় প্রত্যেকেই হাসপাতালে অবস্থান করে টানা সাত দিন সেবা দেবেন। এই সাত দিন তাদের হাসপাতালের ভেতরেই থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কার্যক্রম শুরু হলে হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করা কোনও চিকিৎসক ও নার্স বাইরে বের হতে পারবেন না। সাত দিন কর্তব্য পালন শেষে তারা সবাই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গরোধে থাকবেন। যারা সঙ্গরোধ শেষে সুস্থ থাকবেন অথবা দেহে করোনার উপসর্গ থাকবে না তারা পরবর্তী সাতদিন বাড়িতে অবস্থান করবেন। এ সময় পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে পুনরায় সেবাদাতারা হাসপাতালে ডিউটি করবেন। আর সেবা দিতে গিয়ে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক তাকে এখানেই ভর্তি করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর চিকিৎসা, খাওয়া ও প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতাল থেকেই বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। রোগীদের সেবার জন্য ১০টি আইসিইউ বেড, চারটি ভেন্টিলেটর, সিসিইউ ও ডায়ালাইসিসও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

হাসপাতালে পূর্বে ভর্তি থাকা রোগীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর যেসব রোগী ছুটি দেওয়ার মতো ছিল তাদের ছাড়পত্র দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে কোনও সাধারণ রোগী ভর্তি নেই। করোনা রোগী ছাড়া যত গুরুতরই হোক না কেন- এই হাসপাতালে অন্য কোনো রোগী ভর্তি করা হবে না।’

গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে নতুন করে ৪৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজীপুর সদর উপজেলায় ২৪ জন, কালীগঞ্জে ১৪ জন, কালিয়াকৈরে ৪ জন ও শ্রীপুরের ৬ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত গাজীপুর সদরে ১০৯ জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮৯ জন, কাপাসিয়া উপজেলায় ৭০ জন, কালিয়াকৈর উপজেলায় ২৯ জন এবং শ্রীপুর উপজেলায় ২০ জনের মিলিয়ে মোট ৩১৭ জনের দেহে করোনা পজিটিভ এসেছে। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুইজন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর