শিপইয়ার্ড সড়কে স্বপ্নের ৪ লেনের কার্যক্রম শুরু

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 22:26:09

খুলনা: আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলে স্বপ্ন পূরণ হবে খুলনাবাসীর। নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের এ কথাটির বাস্তব রূপায়ণ যেন মহানগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে খানজাহান আলী (রঃ) সেতু পর্যন্ত শিপইয়ার্ড সড়কটির চার লেনে উত্তীর্ণকরণ কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি।

শনিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে নিজ হাতে হামার (বড় হাতুড়ি) ধরে অধিগ্রহণকৃত জায়গার ভবন অপসারণ কাজের উদ্বোধন করেন নগরপিতা। এতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে খুলনা শহরে প্রবেশ করতে ৭-৮ কিলোমিটার রাস্তা কমবে। পদ্মা সেতু কেন্দ্রিক উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

সূত্র মতে, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) গৃহীত প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ৭ মে একনেকে অনুমোদিত হয়। ৯৮ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৬ সালের জুনে। মেয়াদ শেষের আরও দু’বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়াতে হতাশ হয়েছিল খুলনাবাসী।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান জানান, শিপইয়ার্ড সড়কটি চার লেন হলে রূপসা সেতু ও নগরীর দক্ষিণাংশের চেহারা পাল্টে যাবে। রূপসা এলাকার শিল্পায়ন ও পিছিয়ে পড়া লবণচরা এলাকার
পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য সড়কটি চার লেন করা খুবই জরুরি। পাঁচ বছর পর শুরু হলেও খুলনাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে, হবে, এটা ভেবে সত্যি ভালো লাগছে।

বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। এতোদিন সঠিক জবাবদিহির অভাবে কেডিএর প্রকল্পগুলোতে গতি পায়নি বলে অভিযোগ তার।

কেডিএ সূত্র জানায়, রূপসা নদীর তীরকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে তিন দশমিক ৭৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। সড়কের দুই পাশে হাঁটা-চলার জন্য প্রশস্ত ফুটপাত, মাঝখানে দশমিক ৯২ মিটার রোড ডিভাইডারে ফুলের বাগান করার পরিকল্পনা আছে।

মূল রাস্তা, রোড ডিভাইডার, ড্রেন ও ফুটপাত মিলিয়ে সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া হবে। ইতোমধ্যে সড়কটির নকশা প্রণয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান সড়কের দু’পাশের দুই দশমিক ৮৯ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এখানে একটু জটিলতা রয়েছে।

অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত জমি নিয়ে স্থানীয়দের আন্দোলন, মামলা, জমির ম্যাপ, খতিয়ানসহ কাগজপত্র তৈরি করতেই পেরিয়ে গেছে ৩ বছর। শেষ দুই বছরে কাগজপত্র তৈরি, বিভিন্ন ধারার নোটিশ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ এবং জমির স্থাপনা
নিলামের দরপত্র আহ্বান করা হয়।

কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো. আরমান হোসেন জানান, জমি অধিগ্রহণে সময় লাগার কারণে কাজে দেরি হয়েছে। গত শনিবার থেকে স্থাপনা অপসারণ কাজ শুরু হল। এখন দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে প্রতিদিনই।

কেডিএর প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক কাজী সাবিরুল আলম জানান, সড়কের কাজ শুরু হল। এখন চতুর্মুখী কাজ চলবে। আগামী বছরের শুরুতেই চার লেন সড়ক দৃশ্যমান হবে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘গত পাঁচটি বছর আমি শহরের উন্নয়ন কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারিনি। নগরবাসী এবার তাদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আমিও
প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলে খুলনা মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। তিনি খুলনা তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। এখন আর কোনো প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর