নৌকার মাঝি মিলন আলী। গড়াই নদীতে মানুষ পারাপার করে সংসার চালান তিন। করোনার কারণে নদীতে নৌকা নিয়ে যাওয়া হয় না তার। বেকার হয়ে পড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
কিন্তু শুক্রবার (১ মে) সকালে ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরলেন মিলন। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, ব্যাগে করে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টিকুমড়া, পুঁইশাক, মরিচ, ভেন্ডি, বাঁধাকপিসহ অনেক কিছুই দিল কিন্তু কোনো টাকা নিল না।
করেনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়, দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন 'গ্রীন আর্কিটেক্ট' নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ইঞ্জিনিয়ার আলিমুজ্জামান টুটুল পরিচালিত গ্রীণ চাইল্ড এর উদ্যোগে এই মহতি কাজের উদ্যোগ নেন।
তারা ফ্রি মুদি দোকান ও সবজি বাজার চালু করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার হাটশহরিপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিভিন্ন সবজির পসরা সাজিয়ে মানুষের মাঝে বিতরণ করছেন গ্রীণ চাইল্ড ও 'গ্রীন আর্কিটেক্ট' এর কর্ণধার ইঞ্জিনিয়ার আলিমুজ্জামান টুটুলসহ স্বেচ্ছাসেবকগণ।
ভ্রাম্যমাণ ফ্রি সবজি বাজারে রয়েছে চাল, ডাল, আটা, তেল, লবণ, সাবান, ভিমবার, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টিকুমড়া, পুঁইশাক, মরিচ, ভেন্ডি, বাঁধাকপি।
সবজি নিতে আসা কারিবুল ইসলাম জানান বলেন, তিনি মোটরশ্রমিকের কাজ করেন। করোনার কারণে কাজকর্ম না থাকায় বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। এখানে এসে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ সবজি দিয়ে আমার বেশ কয়েকদিন চলে যাবে।
মিজানুর রহমান লালন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, করোনা সংক্রমণে লকডাউন চলাকালে মানুষ ঘরে অবস্থান করায় তাদের অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই গ্রীণ চাইল্ড এর উদ্যোগে এই ফ্রি মুদি ও সবজি বাজার এসব মানুষগুলোর খুব উপকার হবে।
এ কাজের উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আলিমুজ্জামান টুটুল বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতি কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে এসকল মানুষের পাশে ভ্রাম্যমাণ ফ্রি মুদি দোকান ও সবজি বাজার বসিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আমার উদ্দেশ্য। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।