বেশ কিছু দিন ধরেই প্রচার চলছিল, সৌদি আরবে সাত রোজার দিন ‘কথিত ইমাম মাহদি’ আত্মপ্রকাশ করবেন। কিন্তু না, তার আত্মপ্রকাশ ঘটেনি। তবে নিজেকে ইমাম মাহদি দাবিদার ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান বলেছেন, অচিরেই তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন। এ লক্ষে তিনি আত্মগোপনে থেকে অনলাইনে বায়াতের আহ্বান জানিয়ে আসছেন। ইতোমধ্যে তার কিছু অনুসারীও জুটেছে।
সেই অনুসারীরা তাবলিগের নামে সৌদি আরব যেয়ে ইমাম মাহদির সঙ্গে সাক্ষাতের আশায় একমাস আগে ‘হিজরত’ করে ঘর-বাড়ি ছেড়েছেন। এমনই ১৭ জেএমবির সদস্য ও কথিত ইমাম মাহদির অনুসারীকে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ।
মঙ্গলবার (৫ মে) দুপুরে বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে কথিত হিজরতের চেষ্টাকালে ১৭ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. হায়দার আলী (৪৪), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, মো. জামিরুল ইসলাম (২৪), মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো. শেখ আরাফাত ওরফে জনি (৪৮), মো. ইমরুল হাসান ওরফে ইমন (২৫), মো. সাইফুল ইসলাম (২৫), মো. মোজাম্মেল হক (৩৩), মো. শাহজালাল (৩৪), মো. আক্তারুজ্জামান (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির (২৩), মো. আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ (২২), মো. সোহাইল সরদার (৩৩), মো. ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০), মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ (১৮), মো. মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল ( ২৮) ও মো. সোহাগ হাসান (২০)।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের এডিসি তহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার (৪ মে) সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় কাকরাইল মসজিদের বিপরীত পাশে পাবলিক হেলথ্ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ১৯টি মোবাইল ফোন, ২ লাখ ৩৪ হাজার বাংলাদেশি টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, জনৈক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সৌদি আরবে যান এবং অদ্যবধি সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহদির সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন বক্তব্য এবং গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে মুসলিমদের পক্ষে জিহাদ করার আহব্বান জানিয়ে অডিও-ভিডিও প্রকাশ করেন।
গ্রেফতারকৃতরা তার বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক ঈমাম মাহদির সৈনিক হিসেবে যুদ্ধের প্রস্তুতিস্বরূপ সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।
গ্রেফতারকৃতরা বলেন, তারা পলাতক রবিউল সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় তারা পরস্পর যোগাযোগ করে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। তাবলিগ জামাতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাবে। তাদেরকে বলা হয়েছিলো করোনার দুর্যোগে আকাশ থেকে এক ধরনের গজব নেমে আসবে এবং সমস্ত কিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে তখন সীমান্তে কোনো পাহারা থাকবে না এই সময় তারা যেন চলে আসেন।