বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক এরইমধ্যে ৬টি ক্যাম্পের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে কোভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তার অংশগ্রহণে কেস-ম্যানেজমেন্ট ও মনোসামাজিক স্বাস্থ্যসেবাসহ সংকটকালীন সেবা কার্যক্রমও অব্যাহত রেখেছে অ্যাকশনএইড।
কক্সবাজারে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তবে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলোতে ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। এদিকে, ক্যাম্পে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে, এনজিও কর্মীদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। খাদ্য সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবাসহ জরুরি সেবা ছাড়া ক্যাম্পে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
মহামারি মোকাবিলায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্যাম্প-১০, ১১, ১২ ও ৪ এক্সটেনশন ও ১৮তে কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতনতামূলক সভা, কেস-ম্যানেজমেন্ট, মনোসামাজিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া, ডোর-টু-ডোর ভিজিটের মাধ্যমে রেফারেল সার্ভিস এবং সচেতনতা তৈরিসহ অতি প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছে অ্যাকশনএইড। এছাড়া, মসজিদের ঈমামদের নের্তৃত্বে সচেতনতামূলক সভার মাধ্যমেও প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে।
ক্যাম্পে অ্যাকশনএইডের ১৩টি সেন্টারে সেবা নিতে আসা রোহিঙ্গা নারীদের উদ্বিগ্ন না হয়ে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্ন ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ এড়াতে করণীয় যেমন, নিয়মিত সাবান পানিতে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, কম করে ৩ ফিট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ, বালক ও বালিকাদের। এছাড়া, ২১, ২৬ এবং ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ের কাজ করছে অ্যাকশনএইড। প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা নারীদের মাধ্যমে অ্যাকশনএইডের ৩টি সেন্টারে মাস্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ রেসপন্সের অংশ হিসেবে ১৯ নম্বর ক্যাম্পে কবরস্থানও প্রস্তুত করছে অ্যাকশনএইড।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি কক্সবাজার স্থানীয় প্রশাসনের সাথেও করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে অ্যাকশনএইড। এরইমধ্যে স্থানীয় ১০০টি পরিবারকে একমাসের খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া, জেলার ৮টি আইসোলেশন সেন্টারে পিপিইসহ ৩ মাসের অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় নারী নেতৃত্বাধীন বেশকিছু সংগঠনকেও দেওয়া হবে সুরক্ষা সরঞ্জাম। ৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে মাস্কসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে অ্যাকশনএইড।