আইসোলেশনে থাকা পুলিশের গল্প: যেভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-18 18:37:18

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংস্থাগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত পুলিশেই সবচেয়ে বেশি সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাস সংক্রমণ রোধে শুরু থেকে মাঠে দায়িত্ব পালন করছে এ বাহিনী।

পুলিশ সদর দফতরের থেকে সংগ্রহ করা সবশেষ তথ্য বলছে, সারাদেশে পুলিশে শনাক্ত হওয়া করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৮৫ জনে। যার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্য ছিল ৬৬৬ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে ৯৩ জন পুলিশ সদস্য সুস্থ হয়েছেন। কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ৬৮৯ জন এবং আইসোলশেন আছেন আরও ১০৮৯ জন সদস্য। মারা গেছেন ৬ জন।

আইসোলশনে থাকা পুলিশ সদস্যেদের যেভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর কি কি বা সর্তকতা মানতে হচ্ছে। পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ে বার্তা২৪.কম-এর সঙ্গে কথা হয়েছে আইসোলশনে থাকা একজন পুলিশ সদস্য।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি ডিএমপিতে কাজ করি। গত ৭ দিন হলো করোনা পজিটিভ এসেছে। আমি আইসোলেশনে আছি। এখন কিছুটা ভাল আছি। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলছি।

চিকিৎসকরা প্রতিদিন আমাকে Renova, Panoral 20, Zimax 500, Reconil, Fexofast 120, Telukast 10, Xinc-B, সিকোন ট্যাবলেট নিতে হচ্ছে।

নিয়মিত লেবু, আদা, লং, এলাচি, দারুচিনি, রসুন ১ লিটার পানিতে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে। তারপর নিরাপদ দূরত্বে থেকে মাথার উপর গামছা ধরে পানির গরম বাষ্প নাক দিয়ে লম্বা টেনে মুখ দিয়ে বের করছি। কমপক্ষে ৫ মিনিট। এই কাজটি করি দিনে ৪ থেকে ৫ বার করতে হচ্ছে।

আবার সেই ফুটন্ত মিক্স গরম পানি মগে ঢেলে চা'য়ের মতো করে পান করি, গলায় গড়গড়া করি, চাপাতা দিয়ে চা করে খাই কিছুক্ষণ পরপর।

ফুসফুসকে ভাল রাখার জন্য রুমের বারান্দায় গিয়ে মুক্ত বাতাসে শ্বাস প্রশ্বাস ফেলি কিছুক্ষণ পরপর। এইসময় নাক দিয়ে লম্বা নিশ্বাস গ্রহণ করি ও যত বেশী শ্বাস নিতে পারি নিয়ে নেই। তারপর যতোক্ষণ সম্ভব আটকিয়ে রাখি তারপর মুখ দিয়ে আস্তে আস্তে দম ছাড়ি। এভাবে দিনে ১০-১৫ বার করি।

বারান্দায় ও বিছানায় বসে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করার জন্য ব্যায়াম করি কমপক্ষে দৈনিক দু'বার। অতিরিক্ত ব্যায়াম হিসেবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ তো আছেই।

আদা কেটে সামান্য লবণ দিয়ে প্লেটে রাখি। একটু পরপর মুখে দেই। মাঝেমধ্যে লং মুখে রাখি যাতে গলা শুকিয়ে না যায়।

যে কোনো কিছু খাওয়ার পূর্বে সাবান দিয়ে ভালো ভাবে হাত ধুয়ে নেই এবং হেক্সিসল দিয়ে হাত পরিষ্কার করি।

রুমের বাইরে যাই না কখনওই, পাশের রুমে পরিচিত যারা আছেন তাদের সঙ্গে মোবাইলে প্রয়োজনীয় কথা সেরে নেই।

শরীরে অনেক সময় খুবই অল্পমাত্রায় জ্বর থাকে তাই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করি।

আর একটা পরামর্শ দিয়েছেন, আমার 'কী রোগ হলো' আমি বাঁচবো কি বাঁচবোনা ভুলেও এসব চিন্তাভাবনা মাথায় আনিনা না। শুধু একটা কথা বিশ্বাস করি ‘মনোবলই হচ্ছে এই রোগের আসল চিকিৎসা’। মনোবল হারালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তাই মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্যে আমার যা ভালো লাগে তাই করি।

যেমন, ফেসবুকে পোস্ট দেই, বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে হাসাহাসি করি যাতে ভুলে থাকতে পারি আমি অসুস্থ।

এই পদ্ধতিতে আমি এক সপ্তাহ চিকিৎসা ধরে চিকিৎসা নিচ্ছি,  এখন পুরোপুরি সুস্থ।

পুলিশের এই সদস্য বার্তা২৪.কমকে বলেন, আশা করি দ্রুতই আমার কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর