রংপুরে সীমিত পরিসরে দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও শপিং মল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কড়াকড়ি শর্তারোপ করেছে জেলা প্রশাসন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থাও।
শনিবার (৯ মে) রংপুর জেলা ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতিসহ নগরীর বিভিন্ন বাজার ও শপিং মল কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা মেনে সীমিত পরিসরে দোকানপাটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আলতাব হোসেন। তিনি বার্তা২৪.কম-কে জানান, ব্যবসায়ী মহলের সবার সম্মতিক্রমে সরকারি নির্দেশনা মেনে দোকানপাট ও মার্কেট-শপিং মল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি রংপুর জেলা প্রশাসন থেকে বেশ কিছু শর্তারোপ করা হয়েছে। আমাদেরকে সেগুলো মেনেই ব্যবসা করতে হবে। তবে ক্রেতারা বিধিনিষেধ অমান্য করলে করোনা বিপর্যয় মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
করোনা বিস্তার রোধে রংপুর জেলা প্রশাসন থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতাসহ জনস্বার্থে সতেরটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে শিশুদের মার্কেটে আনতে নিষেধ করার পাশাপাশি প্রতি পরিবার থেকে একজন সদস্যের বেশি না আসতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ক্রেতারা এলাকার ভেতরের মার্কেট বা শপিং মল থেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে হবে। ক্রেতাদের আইডি কার্ড বা পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এক উপজেলার ক্রেতা অন্য উপজেলার বা মহানগর এলাকায় শপিং করতে পারবেন না। মার্কেটের অভ্যন্তরে ক্রেতাদের ভিড় করা যাবে না। দোকান মালিকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দোকানের সামনে ডিসট্যান্স মার্কিং করবেন। নিজ নিজ এলাকা বা উপজেলা/মহানগরের কর্মচারী দিয়ে দোকানের ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। মার্কেটে প্রবেশ ও বাহিরে একাধিক পথ বন্ধ করে ওয়ানওয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। মার্কেটের সামনে বা ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান স্থাপন করা যাবে না।
এছাড়া মার্কেটে প্রবেশে সামাজিক দূরত্বসহ দোকান মালিক, ক্রেতা ও বিক্রেতা এবং সর্বসাধারণের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে পারে। প্রত্যেক দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/জীবাণুনাশক স্প্রে এবং মার্কেটের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক টানেল ও হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত প্রচারণা থাকতে হবে।
নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা সাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার আগামী ১০ মে থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শপিং মলসমূহ সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। উক্ত সিদ্ধান্ত ও সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জনস্বার্থে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।