করোনা আক্রান্তদের ৩০ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়েছেন

, জাতীয়

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-21 22:13:22

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২২ জন আর প্রাণহানি হয়েছে ২৬৯ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৬১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন। যদিও আক্রান্ত রোগীদের একটি বড় অংশের সুস্থ হয়ে ওঠার সঠিক তথ্য নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে।

তথ্য না থাকার কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলছে, অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত রোগী নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই তাদের সুস্থতার কোনো তথ্য-উপাত্ত অধিদপ্তরের কাছে নেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাজধানীতে ১১টি, প্রতিটি বিভাগে ১টি এবং প্রতিটি জেলায় ১টি করে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মঙ্গলবারের (১২ মে) প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট আক্রান্ত রোগীর মাত্র ৩০ শতাংশ বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১৬ হাজার ৬৬০ জন রোগীর মধ্যে ৩ হাজার ৫০০ জন করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এক হাজার ৫০০ জন বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যা মোট আক্রান্ত রোগীর ৩০ শতাংশ। এদের মধ্যে ৩ হাজারে ১৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন ও দুই শতাধিক রোগী মারা গেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. আমিনুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ১ হাজার ৫০০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আক্রান্ত বাকি ৭০ শতাংশ অর্থাৎ ১১ হাজার ৬৬০ জন রোগীর বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, তারা সবাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তাদের মধ্যে কত জন সুস্থ হয়েছেন বা তাদের মধ্যে কারো অবস্থা গুরুতর হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো বিভাগের কাছেই নেই।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষীণ উপসর্গ আছে এমন রোগীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে বাড়িতে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যা দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৭০ শতাংশ। এই ক্ষেত্রে আইইডিসিআর’র চিকিৎসকরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে আইইডিসিআর’র পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে যাদের শরীরে উপসর্গ নেই বা কম উপসর্গ রয়েছে তাদের বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে করে হাসপাতালের ওপর চাপ কমে এবং প্রয়োজনে গুরুতর অসুস্থ রোগীরা যেন হাসপাতালে চিকিৎসা পান।

বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের সুস্থতার তথ্য না থাকার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া রোগীরা যখন অসুস্থ থাকেন তখন তারা ফোন করে চিকিৎসা পরামর্শ নেন। তবে সুস্থ হয়ে গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সেই তথ্য জানান না, এ কারণে তাদের তথ্য দেওয়া সম্ভব হয় না।

অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ২ লাখ ১২ হাজার ৫০৯ জন, যাদের মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজার ১২১ জন। আর বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪১ হাজার ৩৮৮ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৭৫ জন ছিলেন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৮ হাজার ৫৮৭ জন। বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩ হাজার ৯৯৭ জন। এছাড়া আইসোলেশনে রয়েছেন ২ হাজার ৩৬১ জন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর