সারাদিন ব্যস্ত থাকেন ত্রাণ বিতরণ নিয়ে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাবার পৌঁছে দেন। কোনো কোনো দিন বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যায়। সারাদিনের ক্লান্তিহীন পরিশ্রম শেষে আবার বের হন মধ্যরাতে। সাথে থাকে রুটি, নতুবা ভুনা খিচুড়ি। শহরের বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে জটলা বেধে থাকা অভুক্ত বেওয়ারিশ কুকুরের মুখে তুলে দেন এসব খাবার। এভাবেই গত ১৫দিন ধরে কুকুরগুলোকে খাবার খাওয়াচ্ছেন সাদ এরশাদ।
এই কার্যক্রমকে রুটিনে পরিণত করেছেন রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রাহগীর আল মাহি ওরফে সাদ এরশাদ। প্রতিদিন সহধর্মিণী মাহিমা এরশাদকে গাড়িতে করে নিয়ে বের হন। রাত ১১টা থেকে দেড়টা দুইটা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। যেখানেই কুকুরের জটলা দেখেন, সেখানেই নেমে পড়েন। নিজ হাতে রুটি, খিচুড়ি এগিয়ে দেন কুকুরের সামনে।
শুক্রবার (১৫ মে) মধ্যরাতে নগরীর দর্শনা মোড়, লালবাগ মোড় ও পার্কের মোড় এলাকায় প্রায় অর্ধশত কুকুরকে খাবার দিয়েছেন সাদ এরশাদ। সহধর্মিণীর উৎসাহে এ ধরণের কাজ করতে পেরে আনন্দিত এরশাদপুত্র।
করোনা দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নয়, আগে থেকেই এমন কাজ করে আসছেন বলে দাবি করেন এমপি সাদ। বার্তা২৪.কম-কে তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও মানুষের মধ্যে খাবারের জন্য আহাজারি ছিল। ওই সময়টা সবকিছু বন্ধ থাকায় দেখেছি ক্ষুধার্ত হাড্ডিসার কুকুরের কষ্ট। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মোড়ে অলিগলিতে অভুক্ত কুকুর জটলা বেধে থাকত। খুব খারাপ লাগত এমন করুণ অবস্থা দেখে।
গত ৩০ এপ্রিল ঢাকা থেকে রংপুর এসেই অভুক্ত এবং বেওয়ারিশ কুকুরের জন্য কাজ শুরু করেন। প্রতিদিন রাতে পাউরুটি নতুবা ভুনা খিচুড়ি সাথে কখনো রান্না করা মাছ মাংস নিয়ে বের হন। যেখানে কুকুরের জটলা চোখে পড়ে, সেখানেই গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন। অভুক্ত কুকুরের মুখে খাবার তুলে দিয়ে পরিতৃপ্তি খোঁজেন, এসব কথা যোগ করেন সাদ এরশাদ।
রংপুরে ৪৭টি পয়েন্টে অভুক্ত ও বেওয়ারিশ কুকুরের দেখা মিলবে জানিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি সভায় এই তথ্যটি পেয়েছি। সাতচল্লিশটি স্থানে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বেশি। ওই তালিকা দেখে প্রতিদিন বের হই। এখন তো আগের মতো হোটেল রেস্তোরা খোলা নেই। মানুষও বাহিরে বের হতে পারছে না। তাই কুকুরের ভাগ্যে সহসা খাবারও মিলছে না। তাই সাধ্যমত আমি এসব অভুক্ত অবলা প্রাণীর মুখে খাবার দিতে চেষ্টা করছি।