পুলিশকে অসহায়ত্বের কথা বলে রাস্তায় নামছে মানুষ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 22:02:31

করোনা পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই যেন ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে না মানুষকে। নানা অজুহাতে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে রাস্তায় নামছে তারা। দিন এনে দিন খাওয়া কিছু মানুষ বাদে অন্য যারা ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই অপ্রয়োজনে। এর ফলে নিজে সংক্রমিত হচ্ছেন অন্যকে সংক্রমিত করছেন। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যতই কঠোর হচ্ছেন না কেন। কোনোভাবেই এদের ঘর থেকে বের হওয়া থামানো যাচ্ছে না।

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বাইরে কাজ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশকে নানা অসহায়ত্বের কথা বলে রাস্তায় নামছেন তারা। যে সব অসহায়ত্বের কথা বলে তারা রাস্তায় নামছেন তা প্রমাণ করার মত পরিস্থিতি এখন নেই।

এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৬ জন মারা গেছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ৯৩০ জন।

সংক্রমণের এই উদ্বেগজনক চিত্রের মধ্যেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় শপিং মল সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও মানুষকে ঘরে রাখতে সরকার ঘোষিত ছুটি এখনো চলছে। করোনার সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশও বহাল রয়েছে।

কিন্তু রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ‘লকডাউনের’ আগের সময়ের চিত্রই এখন চোখে পড়ছে। মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, রিকশা, হিউম্যানহলার আর ঠেলাগাড়ির জটলা। আর চায়ের দোকানের সামনে পর্দা টানিয়ে আড্ডা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ ছুটির শুরুর দিকে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া বা রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি থামাতে পুলিশি টহল দেওয়া বা চেকপোস্ট পরিচালনা করার ব্যাপারে । এখন একটু ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর এই সুযোগেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার যে সব বিষয়ে মানুষকে ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে পুলিশের বাধা দেওয়ার এখতিয়ার কমে গেছে। তবুও কিছু মানুষকে জেরার সম্মুখীন করলে, এমন অসহায়ত্বের গল্প শোনায়। যেখানে আর কোনো কথা বলার সুযোগ থাকে না।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের অধিকাংশই কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না বলে অনুনয় করে। কেউ হাসপাতালে যেতে চায় রোগী ভর্তি আছে বলে। কেউ কেউ আবার বের হয় পুরো দিনের খাবার যোগাতে। অনেকে আবার শপিং করতেও বের হচ্ছেন।

ফলে মানবিক আর সিদ্ধান্তগত কারণেই তাদের বাধা দেওয়ার সুযোগ থাকে না বলছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে র‌্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। যেখানে দেখা গেছে অধিকাংশ গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হয়। তাদের ধরে ধরে জরিমানা করেছি। মানুষকে আটকানো যায় না।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব বিজয় তালুকদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে মানুষ নানা প্রয়োজন দেখিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। ফলে তাদের জোর করে ঘরে পাঠানো যায় না। নানা রকম অযুহাত দেখান। তবে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে আমরা চেষ্টা করছি।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আব্দুল্লাহপুর দিয়ে ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে চেকপোস্টে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মানুষ দীর্ঘদিন ঘরে থাকায় তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা হয়তো বেড়েছে। এজন্য অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর