ত্রাণ চাওয়ায় আ.লীগ নেতার হামলা, পক্ষ নেওয়ায় স্কুলছাত্র আটক

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-21 23:38:20

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ত্রাণ চাওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরেকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- চারঘাটের নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে আইনাল হক (৪০) ও মতিরুল ইসলাম (২৮), আজাহার আলীর ছেলে আবদুল মোতালেব (৩৩) এবং জালাল উদ্দিনের ছেলে জিল্লুর রহমান (৩৫)। এদের মধ্যে আইনাল রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কথামতো পুলিশ এক স্কুলছাত্রকে আটক করে থানা হাজতে রেখেছে। সে বরকতপুর গ্রামের মোতাহার আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম। স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। যারা ত্রাণ পাইনি বলে কথা তুলেছিলেন, তাদের পক্ষে থাকায় ওই স্কুলছাত্রকে আটক করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় বরকতপুর গ্রামের কামারপাড়া মোড়ে কয়েকজন বসেছিলেন। সেখানে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম নিয়ে আলোচনা ওঠে। কথোপকথনে উঠে আসে- এলাকায় যারা সচ্ছল তারা ত্রাণ পাচ্ছেন। স্থানীয় নেতারা তাদের নিজেদের লোককেই শুধু সরকারি ত্রাণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।

তখন পাশেই ছিলেন নিমপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ। তিনি বিষয়টি শোনার পর তার কর্মীদের ডেকে যারা এসব কথা বলছিলেন, তাদের ওপর হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মারধরে চারজন আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে থানা সূত্র এবং স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতা আরিফ ও তার অনুসারীরা হামলা চালালেও এখন উল্টো আরিফই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফের কথামতো পুলিশ এক স্কুলছাত্রকে আটক করেছে। শনিবার (১৬ মে) দুপুরে তাকে আটকের পর আত্মীয়-স্বজন থানায় গিয়েছিলেন তাকে ছাড়িয়ে আনতে। তবে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমিত কুমার কুণ্ডু তাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা আরিফ বললেই তাকে ছাড়া হবে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মতিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা পানেওয়ালা (অসহায় হিসেবে ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য) তাদেরকে দিছে না। যারা বড়লোক (ধনী) তাদেরকে দিছে। এই কথা বুলাটাই আমার অপরাধ। এরপরই লোকজন জড়ো করে পিটিয়ে সাট করে দিল। ক্ষমতার জোর আছে, স্কুলে পড়া ছেলেটাকে পুলিশ দিয়ে ধরাল। থানা পুলিশ এখন আরিফের কথামতোই চলছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা আরিফের মোবাইলে কয়েক দফা কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আর স্কুলছাত্রকে আটক ও মামলার বিষয়ে শনিবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চারঘাট থানার ওসি সমিত কুমার কুণ্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ঘটনার সবই তিনি জানেন। অভিযোগ থাকায় স্কুলছাত্র মনিরুলকে আটক করা হয়েছে। বাদী ঠিক আছে, তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর