‘কারফিউ মডেলে লকডাউন’ এর চিন্তা, চলবে কড়া নিরাপত্তা তল্লাশি

, জাতীয়

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-23 15:50:32

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিবারের ঈদের চেয়ে এবার ঈদুল ইফতরের চিত্র ভিন্ন হবে। যত দিন যাচ্ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু ততই বাড়ছে। তাই সরকারি নির্দেশনায় বলা হচ্ছে, যে যেখানে আছে, ঈদ বা ছুটিতে সেখানেই থাকবে। তারপরও নির্দেশনা অমান্য করে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে ছুটছেন অনেকেই।

এতে তৈরি হচ্ছে সংক্রমণের বড় ধরনের ঝুঁকি। তাই করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঈদ কেন্দ্রিক মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তে যাচ্ছে প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঈদের আগে ও পরের ছুটির সময়ে লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এক্ষেত্রে ‘কারফিউ মডেলে লকডাউন’ করার কথা চিন্তা করছে সরকার।

মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ সময়ে অন্তত মানুষকে ঘরে রেখে করোনাভাইরাসের লাগাম টেনে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ঈদের আগে ও পরের কয়েকটি দিনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে এ সময়ে চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ বজায় রাখার পক্ষে সরকারের শীর্ষ নীতি নির্ধারণী মহল।

তেমন সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশে যান ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পাশাপাশি সব ইউনিট প্রধানকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

পুলিশ সদর দফতর সূত্র বলছে, ঈদের সপ্তাহ খানেক বাকি থাকলেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটতে শুরু করেছে মানুষ। আবার করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর ঢাকা বা যে কোনো শহরে অবস্থানকারীদের এক প্রকার ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া কাউকে ঘর ছেড়ে বের হতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।এদিকে ঢাকা থেকে যেন মানুষ বাইরে না বের হতে পারে, সেই লক্ষ্যে ঢাকার সবগুলো ক্রাইম ও ট্রাফিক ডিভিশনকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকার চারপাশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ/বাহির পথে ১২টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চলছে কড়া নিরাপত্তা তল্লাশি।

মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মীর রেজাউল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, কেউ যেন ঢাকার বাইরে না যেতে পারে এবং বাইরে থেকে কেউ যেন ঢাকায় ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যাওয়ার একটি ট্রেডিশন আছে, বাট এবার সে বিষয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই সেটিই আমরা বাস্তবায়ন করব। পাশাপাশি মানুষদের ঘরে থাকতে কড়াকড়ি আরোপ করব।

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) আশরাফুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলার পুলিশ সুপারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। আজ থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী কিছুদিন খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া হবে না কাউকে।

আইজিপি ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, ঈদ উপলক্ষে ও সরকার ঘোষিত বর্ধিত ছুটি উদযাপনের জন্য অনেকেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। এটি কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।

মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

আইজিপি আরো বলেন, সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত যেন কোনোভাবেই অন্যান্য জেলা থেকে ঢাকায় এবং ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে কেউ যেতে না পারে। এলোমেলো ঘোরাফেরা করতে দেব না কাউকে।

একইভাবে প্রতিটি জেলা ও মহানগরীতেও জনস্বার্থে কঠোরভাবে এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর