আম্পানের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা

, জাতীয়

নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 02:37:34

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান ঘণ্টায় ১৫-২০ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে এটি।

সোমবার (১৮ মে) আবহাওয়া অধিদফতর এসব তথ্য জানায়।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বার্তা২৪.কম-কে জানান, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের স্থলভাগে আঘাতের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের সুন্দরবন অংশ। কেন্দ্রবিন্দু যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আম্পানে ক্ষতি কম হবে। তবে আঘাতের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সুন্দরবন ছাড়া দেশের অন্য অংশে আঘাত হানলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, স্থলভাগে আঘাতের সময় আম্ফানের গতিবেগ থাকবে ১৪০-১৬০ কিলোমিটার।

তিনি আরও জানান, এসময় উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকতে পারে। তবে ভ্যাপসা গরম থাকবে।

আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ট্র্যাকারে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের অবস্থান

ঘূর্ণিঝড় আম্পান অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কয়েকটি ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে স্থলভাগের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতিবেগ পরিবর্তন হতে পারে। আগামী বুধবারের মধ্যে (২০ মে) খুলনা চট্টগ্রামের মাঝামাঝি দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে। এ সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার হতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর