আম্পানের প্রভাবে উপকূলে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি

, জাতীয়

নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-21 22:47:45

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুপার সাইক্লোন আম্পান দ্রুত বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বয়ে যাচ্ছে। যা দমকা হাওয়া আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেল থেকে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। এসব এলাকা ও অঞ্চলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, ‘আগামী বুধবার (২০ মে) সকালের পর ঘূর্ণিঝড় আম্পান বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে খুলনা বিভাগে ঝড়ো হাওয়া বইছে। একই সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিসহ হালকা বাতাস বইতে পারে। বেশিরভাগ সময় আকাশ মেঘলা আকাশ থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আগামী সকালে মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হতে পারে।’

এরই মধ্যে উপকূলবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, মোট ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জনকে রাখা যাবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হবে। আর আশ্রয়কেন্দ্রে আনাদের মধ্যে ১ মিটার দূরত্ব নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগে ঘূর্ণিঝড় ফণীতে ১৮ লাখ এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপার সাইক্লোন আম্পান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। আম্পান খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল (সুন্দরবন) দিয়ে মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর