আম্প‌ানে সাতক্ষীরা উপকূলের ৪৩ কিমি বে‌ড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিতে

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-08-28 12:24:49

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আম্পানের প্রভাবে নদ-নদীর পা‌নি বৃ‌দ্ধি পাওয়ায় এ সময়ে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলের ৪৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিতে আছে। বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে প্রহর গুনছে সাতক্ষীরা উপকূলের শ‌্যামনগর ও আশাশুনির গ্রামবাসীরা।

পাউবোর সূত্রমতে, সাতক্ষীরায় পাউবোর দু‌টি বিভাগের মধ্যে ৮০২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ‌্যে শ‌্যামনগর ও আশাশু‌নির চরম ঝুঁকিতে থাকা ৪৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রাতেও কাজ করছেন। ইতিমধ্যে দুটি বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চরম ঝুঁকিতে থাকা ৪৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের যে গতিবেক বলা হচ্ছে তাতে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে পারে। সেই অবস্থা হলে অনেকস্থানের বেড়িবাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবেনা।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বার্তা২৪.কম কে বলেন, পাউবো বিভাগ-১ এর মধ্যে রয়েছে ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। তারমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ২৫ কিলোমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বার্তা২৪.কম কে বলেন, পাউবো বিভাগ-২ এর অধীনে রয়েছে ৪২২ কিলোমিটার বেড়িবাধ। এরমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে প্রহর গুনছে সাতক্ষীরা উপকূলের শ‌্যামনগর ও আশাশুনির গ্রামবাসীরা

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খাজরা বাজার পয়েন্ট, গদাইপুর আনুলিয়া ইউনিয়নের কাকবাসিয়া, বিছট শ্রীউলা ইউনিয়নের হিজলা, মাড়িয়ালা, কাকড়াবুনিয়া, প্রতাপনগরের ঘোলা, নাকনা, কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, আশাশুনি সদর ইউনিয়নের বলাবাড়িয়া দয়ারঘাট, জেলেখালী বেশ কয়েকটি স্থান চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী, পাশ্বেমারী, খলসেবুনিয়া, চাঁদনীমুখা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পোড়াকাটলা, টুঙ্গিপাড়া, হুলো, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চুনকুড়ি, কাশিমাড়ি ইউনিয়নের ঝাপালী ঘোলা, ত্রিমোহনী আটুলিয়া,  রমজাননগর ইউনিয়নের গোলাখালী, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বাইনতলা, কামালকাটি, সুভদ্রকাটিসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা আবুল বাসেত জানান, আম্পানে সম্ভাব‌্য ক্ষয়-ক্ষ‌তি এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবার্ত্নক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় ১৪৫ টি সাইক্লোন শেল্টার ও ১৭০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসন ও চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে যাতে মাস্ক, হ্যান্ডসেনিটাইজার ও সাবানের ব্যবহার নিশ্চত করা যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে মানুষ স্বেচ্ছায় আসতে চাচ্ছেনা। তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাতে বেশকিছু অঞ্চলের মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছে বলে ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর