খাবার না দেওয়ার অভিযোগে আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়ছে মানুষ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর | 2023-08-24 21:39:16

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে লক্ষ্মীপুরে প্রশাসনের নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এতে কাজ করেছে পুলিশ, কোস্টগার্ড, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু বুধবার (২০ মে) ভোরের আলো ফুটতেই আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ির পথ ধরেছে মানুষ।

তবে বাড়ি ফিরে যাওয়া মানুষগুলোর অভিযোগ, তাদের খাবার দেওয়া হয়নি। পেটে ক্ষুধা নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে বসে থাকতে রাজি নয় তারা। এজন্য সবাই বাড়ি চলে যাচ্ছে।
কমলনগর উপজেলায় কাজ করা একাধিক উদ্ধারকর্মীর তথ্য অনুযায়ী, পুরো উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষকে তারা উদ্ধার আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু রাতে কাউকেই খাবার দেওয়া হয়নি। যে কারণে সকাল থেকে সবাই চলে যাচ্ছেন। কমলনগরে উদ্ধার কাজে ৬৩টি ইউনিয়নের অধীনে ৯৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্র।

কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছয়েফ উল্যাহ জানান, মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া তার ইউনিয়নে আর কোন আশ্রয় কেন্দ্র নেই। তবুও প্রায় ১৫০ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে শুকনো খাবারও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভোরে সবাই আবার বাড়ি ফিরে গেছে। তার ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ রয়েছে। তিনটি ওয়ার্ড নদীতে ভেঙে যাওয়ায় তারা আশপাশের ইউনিয়নের বসবাস করছেন।

সদর উপজেলার চরমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ছৈয়াল জানান, মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে রাজি হচ্ছে না। তবুও গতকাল রাতে প্রায় ২০০ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। কিন্তু ভোর রাত থেকেই সবাই চলে গেছে। এই ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ রয়েছে। কিন্তু এর পরিবর্তে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৮টি।

এদিকে জেলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রামগতি উপজেলা। এ উপজেলার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন মেঘনা বেষ্টিত চর আবদুল্লাহ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনের তথ্যমতে এই ইউনিয়নে প্রায় ১৪ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। কিন্তু এই ইউনিয়নের প্রায় ২০০ মানুষকে মঙ্গলবার উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। বাকিরা বিভিন্নভাবে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। তবে এই উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। উপজেলায় ৬৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এখানে ১০১টি টিমের অধীনে ১ হাজার ৫১৫ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল মোমিন জানান, মঙ্গলবার রাতে তিনি চরআলগি, বড়খেরিসহ ৩-৪টি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যেকটি আশ্রয় কেন্দ্র মানুষের জন্য খাবার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মানুষকে খাবার দেওয়া হয়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তিনি। ঝুঁকিপূর্ণ চর আবদুল্লাহতে পুলিশ, কোস্টগার্ড পাঠিয়ে কিছু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছেন। তবে অধিকাংশই আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর