করোনায় চিরচেনা রূপ হারিয়েছে ঈদ বাজার

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-23 13:43:12

আজ রমজান মাসের ২৮ তারিখ। ঈদের বাকি দুই কিংবা তিন দিন। অন্যান্য বছর এই সময়ে মানুষের ব্যস্ততা থাকে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে। তবে ঈদের চিরচেনা সেই আনন্দ এবার কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। ঈদকেন্দ্রিক বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের কেনাবেচায় উৎসবমুখর জমজমাট পরিবেশও নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের দাম বাড়তি থাকলেও অধিকাংশ পণ্যের দাম রয়েছে স্থিতিশীল।

ঈদকে কেন্দ্র করে কিছু পণ্যের চাহিদা ও দাম বেড়েছে। চাহিদা বেড়েছে পোলায়ের চালের, সেমাই, চিনি, দুধ ও সব ধরনের মসলার। চাহিদা বাড়ায় খুচরা বাজারে সেমাই, আদা, ব্রয়লার মুরগি, মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে।

শুক্রবার (২২ মে) রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

ক্রেতা শূন্য নিত্যপণ্যের দোকান

রায়ের বাজারের মুদি দোকানদার আনোয়ার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ঈদের বেচাকেনা অনেক কম। করোনার কারণে মানুষের আয় কমে গেছে। কারো কারো আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কাজ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষ। মানুষের হাতে টাকা না থাকলে তাদের ক্রয় ক্ষমতা এমনিতেই কমে আসে। যার কারণে ঈদকেন্দ্রিক বেচাকেনাও কম। গত বছরের তুলনায় কিছু পণ্যের দাম কমেছে, কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তাছাড়া দাম তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে পোলায়ের চাল কেজিপ্রতি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৯০-১২৫ টাকা। ২০০ গ্রামের প্যাকেটজাত সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা। খোলা চিকন সেমাই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। খোলা লাচ্ছা সেমাই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা। আর প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। বাজারে প্যাকেটজাত প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। প্রতি কেজি কিসমিস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতি কেজি লবঙ্গ ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, লাল লেয়ার মুরগি ২১০ টাকা কেজি, সোনালী মুরগি আকার ভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা কেজি, টমেটো ৫০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, পটল ৪০ টাকা কেজি, কচুর লতি ৪০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়ার ফালি আকার ভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স ৩০ টাকা কেজি, ঝিঙা ৩০ টাকা কেজি, লাউ আকার ভেদে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

ঈদকেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্যের বাজারে চিরচেনা উৎসব নেই

শংকর থেকে রায়েরবাজারে বাজার করতে এসেছেন আব্দুল খালেক। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, করোনার কারণে স্বাভাবিক জীবনে বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ নানা ঝামেলার মধ্যে আছে। যার জন্য এবারের ঈদ আগের ঈদের মত হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পণ্যের দাম আগে যা ছিল এখনও তেমনই আছে। চোখে পড়ার মত দাম বাড়েনি। তাছাড়া কিছু কিছু জিনিসের দাম ঈদ এলে ৫-১০ টাকা বাড়ে। এমন দাম বৃদ্ধি অন্যায় হলেও আমরা এসবের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি।

মাছের আমদানি কিছুটা কম হওয়ায় মাছ ভেদে কেজি প্রতি দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেশি। প্রতি কেজি ছোট সাইজের রুই মাছ ২২০ টাকা, ছোট মাঝারি সাইজের রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। বড় সাইজের রুই মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ ৪৫০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, মাঝারি সাইজের বোয়াল ৪৫০ টাকা, বড় সাইজের গ্রাসকার্প ৩০০ টাকা ও শিং মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মাছ ব্যবসায়ী রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, পাইকারি বাজারে মাছের আমদানি কম। যার জন্য কেজি প্রতি প্রায় ৬০ থেকে ৮০ টাকা বেশি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দিন আগে তুফান (ঝড়) হয়েছে। অনেকের মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। রাস্তা ঘাট নষ্ট হয়েছে। গাড়ি চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। যার কারণে মাছ চাষিরা মাছ কম ধরতে পারছে না। পাইকারি বাজারে আমদানি কম। পাইকারি বাজারে আমদানি কম হলে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে যায়। আমাদের তখন কিছুই করার থাকে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর