এখন ঘরে বসেই লেকচারের বই হাতে পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ১১ মে সোমবার থেকে অনলাইনে অর্ডার করা যাচ্ছে লেকচার পাবলিকেশন্সের সব বই। পরীক্ষামূলকভাবে এই সেবা সফলভাবে চালানোর পর গত বৃহস্পতিবার ২১ মে উদ্বোধন করা হয় লেকচার পাবলিকেশন্সের এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।
করোনার কবলে পুরো বিশ্ব যেন থমকে আছে। আমেরিকা, কানাডা কি ইউরোপের স্পেন,ফ্রান্স,ইতালি বা আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারত কিংবা পাকিস্তান কেউই রেহাই পায়নি মহামারি করোনার ছোবল থেকে। এরইমধ্যে সারা বিশ্বে ৪৫ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে দফায় দফায় লকডাউনের মতো কার্যক্রম নিতে হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রকে।
বাংলাদেশেও কয়েক দফায় ২৬ মার্চ থেকে চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ রয়েছে দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মানুষের ঘরের বাইরে যাবার ব্যাপারে আনা হয়েছে কড়া বিধি নিষেধ।
মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকেই কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বন্ধ আছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বাসায় বসেই পাঠে অংশ নেয়ার জন্যে সরকার অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। করোনার প্রকোপের মাঝে অতি সহসাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার কোন সম্ভবনা নেই বলে এরইমধ্যে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাই শ্রেণি কক্ষের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশুরা যেন সহজেই যেন ঘরে বসেই সহায়ক বই হাতের নাগালে,পেয়ে যান সেই লক্ষ্যে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের জন্যে বই বিক্রির কার্যক্রম চালাচ্ছে লেকচার পাবলিকেশন্স। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান,
" গত ১০ই মে রোববার আমরা boibazar.com এর সাথে এমওইউ সাক্ষর করি। এর পরিপ্রেক্ষীতে পরদিন সোমবার, ১১ মে থেকে অনলাইনে লেকচারের বই বিক্রি শুরু হয়।"
lecture Books নামের এন্ড্রোয়েড এপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় বই অর্ডার করতে পারবে। এছাড়াও www.lecturepublications.org এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও বই অর্ডার করা যাবে। এতে এখন থেকে অতি সহজেই ঘরে বসে লেকচারের সহায়ক বই অর্ডার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। আর তা তাদের বাসায় পৌঁছে দেবে কর্তৃপক্ষ। এই কয়দিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয় কার্যক্রম। গত বৃহস্পতিবার ২১ মে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় প্ল্যাটফর্মটি।
অমিকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান 'লেকচার পাবলিকেশন্স' শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানালেন, অমিকন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মেহেদী হাসান। তিনি বলেন,
" সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বেশ কয়েকদিন যাবত। কবে খোলা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু খুললেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুরু হয়ে যাবে পরীক্ষা। তাই ছুটির সময়টাতে ছাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার মধ্যেই থাকতে হবে। এসব থেকেই আমরা অনলাইন সেবাটা চালু করছি। শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই অনলাইনের কার্যক্রম শুরু করছি।"
করোনার এই দুঃসময়ে সবধরণের প্রতিরোধক ব্যবস্থা আর সাবধানতা অবলম্বন করেই কার্যক্রম চলবে বলে জানান এই চেয়ারম্যান। সেজন্যে কর্মীদের জন্যে প্রণোদনার ব্যবস্থাও রাখছেন তিনি।
এছাড়াও ১৫০০ কর্মকর্তা- কর্মচারীর ঈদের বোনাস প্রদান করেছে অমিকন গ্রুপ। এর আগে গত মার্চ, এপ্রিলের বেতনও অগ্রিম পরিশোধ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। মে মাসের বেতনও অগ্রিম দিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও ৯২০০ সহায়ক কারখানা কর্মী এবং দেশব্যাপী খুচরা বিপণিগুলোতে বিক্রয়, বিপণন ও বিতরণে নিয়োজিত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর জন্য পরিশোধ সেবা অব্যাহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। অমিকন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মেহেদী হাসান এ ব্যাপারে বলেন,
"এখন পর্যন্ত অমিকন গ্রুপ ১৫০০ কর্পোরেট মানব-সম্পদের পাশাপাশি ৯২০০ সহায়ক কারখানা কর্মী এবং দেশব্যাপী খুচরা বিপণিগুলোতে বিক্রয়, বিপণন ও বিতরণে নিয়োজিত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর জন্য পরিশোধ সেবা অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়াও দেশব্যাপী আকস্মিক লকডাউনের কারণে আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ বই বিতরণের অনলাইন পরিসেবা চেইন ও খুচরা বিপণিগুলো বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়িক সংগঠন ও অংশীদারদের প্রতিটি বিপর্যস্ত পরিবারে অমিকন গ্রুপ তার সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। অমিকন গ্রুপসহ অন্যান্য সকল ব্যবসায়ের পাশাপাশি আমি ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন ‘নগদ’-এও একজন বোর্ড অব ডিরেক্টর হিসেবে জড়িত, যেখানে তারা COVID-19 এর মহামারী শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ৪,৫০০ কর্মচারীর সম্পূর্ণ বেতন এবং অন্যান্য সুবিধাদি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।"
লেকচার পাবলিকেশন্স দেশের প্রথম সারির সহায়ক বই এর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। অমিকন গ্রুপের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি।