যুবলীগ নেতা ফিরোজ খুন হয় বন্ধুদের হাতে!

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া | 2023-09-01 03:45:05

যাদের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ সেই বন্ধুদের হাতেই নির্মমভাবে খুন হলেন বগুড়া শহর যুবলীগ নেতা ফিরোজ মিয়া (৩৫)।

মঙ্গলবার (২৬ মে) সন্ধ্যার আগে শহরের জহুরুল নগর এলাকার একটি ছাত্রাবাসে ফিরোজকে কুপিয়ে হত্যা করে তারই একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা।

ফিরোজ খুনের পর অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে বিরোধ হওয়ায় সম্প্রতি ফিরোজ আরেকটি গ্রুপের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। এ কারণেই তারই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হত্যা মামলার সহযোগীরা তাকে খুন করে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, চকসুত্রাপুর চাপড় পাড়ার ফজলার রহমানের ছেলে ফিরোজ এলাকায় টোকাই হিসেবে পরিচিত ছিল। একসময় ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। পাশাপাশি স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক মিছিল মিটিং এ অংশ নিতো ফিরোজ । ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর দিনে-দুপুরে চক সুত্রাপুরে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় যুবদল নেতা ইমরানকে। সেই মামলায় ফিরোজ ছিল ৫ নং আসামি। এরপর ২০১৪ সালে ফিরোজ ৪ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়ে যান। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর শহরের মালগ্রামে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সন্ত্রাসী রঞ্জু খুনের সাথেও জড়িত ছিল ফিরোজ। ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর চকসুত্রাপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাকিল ওরফে পা কাটা শাকিল খুনের মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন ফিরোজ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফিরোজকে কুপিয়ে হত্যার সময় তার আরও দুই সহযোগী মামুন এবং ইমরানকে কুপিয়ে জখম করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন ও ইমরান এবং স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধানে জানা যায়, যুবলীগের পদ পাওয়ার পর থেকেই চকসুত্রাপুর ও জহুরুল নগর এলাকায় মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন ছাত্রাবাস নিয়ন্ত্রণ করতো ফিরোজ। সম্প্রতি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে বিরোধ হয় ফিরোজের।

চলতি মাসের প্রথম দিকে ফিরোজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান শুরু করেন। তিনি উল্লেখ করেন চকসুত্রাপুর ও জহুরুল নগর এলাকায় মাদক বিক্রি বন্ধ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা আমার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করে। এছাড়াও করোনা প্রাদুর্ভাবে কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ নিয়েও তার বন্ধুদের সাথে বিরোধ কিছুটা প্রকাশ্যে আসে। এরপর বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কয়েকদিন আগে ফিরোজের এক রাজনৈতিক গুরু তাকে ডেকে পাঠায়। কিন্তু ফিরোজ সেখানে না যাওয়ায় তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। ফিরোজ নেতার ডাকে সাড়া না দিয়ে যুবলীগের আরেক গ্রুপের সাথে গোপনে যোগাযোগ শুরু করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় ফিরোজের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা। আর এ কারণেই ফিরোজকে খুন করে তারই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ফিরোজ খুনের ব্যাপারে তার স্ত্রী সুমি বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনের নামে মামলা করেছে। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে জড়িতদের গ্রেফতার করতে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর