ছুটি বাড়ানোর সুপারিশ করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

, জাতীয়

ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 17:58:39

দেশের চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি ছুটি শেষ হচ্ছে ৩০ মে। দিন যত যাচ্ছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে- ছুটি কি আরও বাড়বে, নাকি এখানেই শেষ হচ্ছে দীর্ঘ এই সাধারণ ছুটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সুপারিশ করা হয়নি। আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, ছুটি বাড়ছে কিনা জানা যাবে বৃহস্পতিবারই। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে ছুটি এক সপ্তাহ বাড়তে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ছুটি এক সপ্তাহ বাড়ানো যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে ছুটি বাড়তে পারে। তবে ছুটি বাড়লেও মুখে মাস্ক ব্যবহার করে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মানুষকে অভ্যস্ত করার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে সরকার। এ জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে সকলের মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা। বর্তমানে ৯৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন, আর ৫ ভাগ মানুষ বিভিন্ন অজুহাতে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। সুতরাং এই ৫ শতাংশ মানুষকেও মাস্ক ব্যবহারে অভ্যস্ত করার বিষয়টিতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এছাড়াও মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ও টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে।

এদিকে ছুটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বুধবার (২৭ মে) বার্তা২৪.কম-কে তিনি বলেন, ছুটির সঙ্গে কিন্তু দেশের অর্থনীতি জড়িত। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কিন্তু কাজ করে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জীবিকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ কিন্তু তাদের মার্কেট খুলে দিচ্ছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তিনি বলেন, আমরা সকলের মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই। কারণ এভাবেই চলতে থাকলে আমাদের তো মাস্ক পড়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হবে। আর মানুষের পুষ্টিকর খাদ্যের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা কর্মহীন হয়ে পড়লে সেটি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। তাই তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার বিষয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। আর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে গণপরিবহন চালু করা হবে, এরআগে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না।

ছুটির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, করোনার কারণে দুই মাস ধরে অফিস বন্ধ। এভাবে আর কতদিন বন্ধ রাখা যাবে। সরকারকে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে প্রদানমন্ত্রী সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সুপারিশ করেনি।

করোনার এমন পরিস্থিতিতে সীমিত আকারে অফিস খোলার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে আরও লকডাউন বাড়ানো, কারফিউ জারিসহ বিভিন্ন কথা বলছেন। যেহেতু ছুটির আরও দুইদিন বাকি আছে, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এর মধ্যেই হয়ত প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। আর এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫৪৪ জন। মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ২৯২জন।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর সেই ছুটির মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর