আসগর আলী হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু!

, জাতীয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 04:25:19

আসগর আলী হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হৃদরোগে আক্রান্ত অশোক কুমার দাসকে হাসপাতালটিতে নিয়ে গেলে তারা কোনোই চিকিৎসা দেয়নি। বিনা চিকিৎসার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জনতা ব্যাংকের সাবেক এ প্রিন্সিপাল অফিসার।

এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত সচিব মানিক চন্দ্র দে। তিনি লিখেছেন, ‘বেসরকারি একটি হাসপাতালের চরম দায়িত্বহীনতার শিকার হলো আমার একমাত্র ছোটবোনের স্বামী অশোক কুমার দাস। দিব্বি সুস্থ একটা মানুষ, তীব্র হার্ট অ্যাটাক নিয়ে গত রাত (২৭ মে) দু’টোর সময় গেছিল দেশের একটি বড় হাসপাতাল আসগর আলীতে। পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠে অবস্থিত এ হাসপাতালটিকে আমরা পুরান ঢাকাবাসী আমাদের গর্বের হাসপাতালই ভেবেছিলাম। কিন্তু আমি একজন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এবং এ এলাকার বাসিন্দা পরিচয় দেওয়ার পরও এবং বার বার করোনা রোগী না বলা সত্ত্বেও আমার একমাত্র ছোটবোনের হাজবেন্ড অশোক (সাবেক সিনিয়র প্রন্সিপাল অফিসার, জনতা ব্যাংক) পেলনা জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা।

হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুলেন্সে রেখেই ছোট একটা কার্ডিয়াক সেন্সর দিয়ে টেস্ট করে (না অক্সিজেন, না ভেতরে নিয়ে পরীক্ষা) রোগীর পালস পাওয়া যাচ্ছে না বলল। মৃতও ঘোষণা করল না, সার্টিফিকেটও দিল না। অথচ আমাদের অশোক কোভিড রোগী ছিল না। তারা বাইরে গাড়িতে রেখে দেখল। আমি নিজে বললাম, তারপরও যে অবস্থায় পেল, সে অবস্থায় ব্রড ডেড সার্টিফিকেটও হাসপাতালটি দিল না।

অথচ নর্মাল সময়ে সামান্য চিকিৎসা দিয়ে কত বিপুল টাকা রোগীদের কাছ থেকে নিয়ে নেয় এ হাসপাতালটি। বেশিরভাগ ডাক্তারই অত্যন্ত জুনিয়র, সিনিয়র ডাক্তার নাই বললেই চলে। কাল রাতে সারা ইমারজেন্সিতে একজন মাত্র জুনিয়র ডাক্তার ছিল। আমি পরিচয় দেওয়ার পরও সামান্যতম সৌজন্যতাটুকু সে দেখাল না। মৃত্যুর আগে আমার প্রিয়তম একমাত্র বোনের স্বামীটি পেল না সামান্য চিকিৎসা, করোনা রোগী না হওয়া সত্ত্বেও। এ হল আমাদের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসার নমুনা। আমাদের মতো অনেক ভুক্তভোগীকেই এ পরিণতি মেনে নিতে হচ্ছে।’

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে আসগর আলী হাসপাতালের ডিউটি ম্যানজার মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসগর আলী হাসপাতাল কোনো পেশেন্টকে ফেরত দেয় না। সাফারার যে হন, তার মধ্যে অনেক অভিযোগ থাকেই। আমরা ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দিচ্ছি। কোভিড হলেও আমরা আইসিইউ সাপোর্ট দিয়ে থাকি। এ কেসটির বিষয়ে এখন বিস্তারিত বলতে পারব না। আপনি জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে পারেন।
তবে অনেক চেষ্টা করেও জরুরি বিভাগে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

করোনার কারণে অনেক হাসপাতালেই এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের। তারা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়াচ্ছেন, কিন্তু কেউ তাদের চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন না। মাঝে মধ্যেই এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে হৃদরোগে আক্রান্তরা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। কোভিড হাসপাতালগুলোও পরীক্ষা ছাড়া রোগী নিতে চাচ্ছে না। আবার পরীক্ষা করলেও রিপোর্ট পেতে কমপক্ষে দু’দিন লেগে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতির বিষয়ে আশুকরণীয় নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।ৃ

এ সম্পর্কিত আরও খবর