নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে খরস্রোতা ধনু নদীর অব্যাহত ভাঙনে গত পাঁচদিনে ৫৭টি পরিবারের ভিটেমাটি বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক মাস পূর্বে এ নদীর ভাঙনে গ্রামটির আরও অর্ধশত পরিবার বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) ক্ষতিগ্রস্তদের সাময়িকভাবে বরাদ্দহীন খাস জমিতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম।
এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরপাড়া গ্রাম ঘেঁষে ধনু নদী প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধিতে প্রবল স্রোতে গত রোববার (২৪ মে) সকাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুর পর্যন্ত গ্রামটির কামাল মিয়া, বকুল মিয়া, সামছু মিয়া, ফুল মিয়া, সাজু মিয়া, আলী উসমান, সুলমান মিয়া, ফারুক মিয়া, হেলাল মিয়া, হেকিম মিয়া, মালেক মিয়া, মাসুক মিয়া, খালেক মিয়াসহ ৫৭টি পরিবারের ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এছাড়া গত কয়েক মাস আগেও নদীর ভাঙনে গ্রামের আরও অর্ধশতাধিক বাড়ি বিলীন হয়। ভাঙন ঠেকানো না হলে প্রায় ৬শ পরিবারের পুরো গ্রামটিই নদী গর্ভে হারিয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা।
স্থানীয়রা বলছেন, অনেক গভীর এবং খরস্রোতা ধনু নদীতে প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে ভাঙন রোধ করা অসম্ভব। তাই গ্রামটিকে রক্ষার জন্য নদীর স্রোতধারা খননের মাধ্যমে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে হবে। গ্রামটির কয়েক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে হাওরে (অধিকাংশই বিল এলাকা) তিন-চার কিলোমিটারের মতো খনন করলেই একদিকে গ্রামটি যেমন রক্ষা হবে, তেমনি নদীকে ঘিরে প্রতিনিয়ত লঞ্চ, কার্গো চলাচল করা নৌ-পথের একটি বড় বাঁকও সোজা হবে।
এ বিষয়ে কথা হলে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম বলেন, নদী খনন করতে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। প্রস্তাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সুপারিশও রয়েছে। এছাড়া ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর স্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করতে একটি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের জন্য ওপর মহলে লিখিত প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।