করোনা মহামারির এই দুর্যোগে গণপরিবহন বিশেষত বাস ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি না করে জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও পরিবহনে চাদাঁবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শুক্রবার (২৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে কর্ম হারিয়ে নিদারুণ আর্থিক সংকটে থাকা জনগণের ওপর বর্ধিত ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হলে ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’-এ পরিণত হবে।
মোজাম্মেল হক আরো বলেন, যেকোন সংকটে বা অজুহাতে দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালে তা স্বাভাবিক সময়েও কমানোর কোন নজির নেই। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ ছুটিতে থাকা সাধারণ মানুষজন এখন এক ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পতিত, তাই অর্ধেক যাত্রী নিয়েও যাতে গণপরিবহনগুলো বিদ্যমান হারে ভাড়া আদায় করে পরিবহন সেবা চালু রাখতে পারে সে জন্য গণপরিবহন চালুর আগে জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে বহু আগেই তেলের দাম কমেছে। দেশে দীর্ঘদিন যাবত কম মূল্যে জ্বালানি তেল কিনে চড়া দামে বিক্রি করে বেশ মুনাফা অর্জন করেছে বিপিসি। বর্তমানে দেশের রিজার্ভারগুলোতে উপচেপড়া জ্বালানি তেল মজুতের খবর ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে।
অন্যদিকে, রাজধানীতে চলাচলকারী প্রতিটি বাস-মিনিবাস দৈনিক গড়ে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা কোথাও ২০০০ টাকা পর্যন্ত চাদাঁ দিতে হয় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে। প্রতিটি লেগুনা দৈনিক গড়ে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা চাদাঁ দিয়ে চালাতে হয়। এইভাবে প্রতিটি গণপরিবহন দৈনিক গড়ে যে পরিমাণ চাঁদা দেয় তা রোধ করার পাশাপশি সরকার সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়েও যাতায়াত সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
এছাড়াও লঞ্চ পরিচালনার ক্ষেত্রে একমাত্র উপকরণ জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে গড় বোঝাইয়ের অর্ধেক যাত্রী নিয়েও লাভজনকভাবে যাতায়াত সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ খালি সিট ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও প্রতিটি বাস-মিনিবাসে ১০ থেকে ১৫টি অতিরিক্ত আসন সংযোজন করা আছে। এসব বিষয় এই সংকটকালীন মুহূর্তে বিবেচনায় নিলে সড়ক ও নৌ-পথের কোন পরিবহনে ভাড়া না বাড়িয়েও স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী লাভজনকভাবে অর্ধেক যাত্রী নিয়েও যাতায়াত সম্ভব বলে দাবি করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।