রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) অভিযানে কথিত জিনের বাদশা চক্রের চার প্রতারক আটক হয়েছে। এই চক্রটি সাধারণ মানুষকে ভাগ্য পরিবর্তনের প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল ফোনে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- রিয়াদ হাসান রকি ওরফে রায়হান (২০), সিদ্দিকুল ইসলাম (৩৫), আজহার আলী শেখ (৩২) ও রফিকুল ইসলাম ওরফে রিপন (৪৫)। এরা সবাই গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের তালুক কানপুর, নাকাই ও বাজুনিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার (২৯ মে) বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে প্রতারক চক্রটির ওই চার জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আরপিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান।
তিনি জানান, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শফিকুল ইসলামকে গভীর রাতে মোবাইল ফোনে ইসলামিক আলাপচারিতায় ভাগ্য পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলেন কথিত জিনের বাদশা চক্রের ওই প্রতারকরা। তারা বিভিন্ন সময় ফোনের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক ধাপে ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন। এ নিয়ে গত বুধবার (২৭ মে) মাহিগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন শফিকুল ইসলাম।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিষয়টি গুরুত্বে নিয়ে অভিযোগের প্রকৃত রহস্য উন্মোচন ও জড়িতদের শনাক্তে ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হয় বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সহকারী পুলিশ কমিশনার (মাহিগঞ্জ জোন) ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাতে সারাদিন অভিযান পরিচালনা করে ওই চারজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তারা।
কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান বলেন, ‘এই চক্রটিসহ গাইবান্ধা জেলার শত শত প্রতারক চক্র প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নানান শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রতারিত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে অনেক মানুষ। বিশেষ করে নিরক্ষর, অসচেতন ও মহিলারা তাদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরদের এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটদের সহযোগিতায় ভুয়া সিম সংগ্রহ করে রমরমাভাবে এই প্রতারণার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে কথিত জিনের বাদশা চক্রের সদস্যরা।’