করোনা সন্দেহে তিস্তা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্ধার করা সেই গার্মেন্টসকর্মী মাহমুদা বেগম মৌসুমির (২১) মরদেহ দাফনে বাধা দেয়ার সত্যতা পেয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তদন্তে।
নিজ গ্রামে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ নিশাত দাফনে বাধা দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় তদন্তের পর এ তথ্য নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর। এর আগে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমি আক্তার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে। তিনি একই উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী।
তিস্তায় মরদেহ ভাসিয়ে দেয়া নারীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানান, গাজীপুর থেকে গত ২১ মে শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করলে ট্রাক যোগে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এরপর রংপুরের তাজহাট এলাকায় থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে দাফন করতে না দিয়ে করোনা সন্দেহে তিস্তা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২ দিন পর পুলিশ ওই নারীর মরদেহ তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে নিজ গ্রামে দাফন করা হয় মাহমুদাকে।
এ ঘটনার পর নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান নেওয়াজ নিশাত দু’দফা সংবাদ সম্মেলন করেন।
করোনা সন্দেহে মরদেহ ফেলে দিল তিস্তায়, ২ দিন পর উদ্ধার
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক(ডিডি) রফিকুল ইসলাম গত ২৬ মে সরেজমিনে ঘটনা তদন্তে বুড়িমারী ইউনিয়নে যান। তদন্ত শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা ছিল বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, কল লিস্ট যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রকৃত ঘটনা বের করার জন্য মাঠে আমাদের টিম কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে বিষয়টির একটি প্রশাসনিক তদন্ত রিপোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে চেয়ারম্যান কর্তৃক মরদেহ দাফনে বাধা দেয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে।