দারিদ্র্য হাবিবাকে দমাতে পারেনি

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর | 2023-08-23 12:12:41

নিজে পড়ালেখা করেননি, কিন্তু মেয়েকে পড়ালেখা করিয়ে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন দেখছেন যশোরের বাঘারপাড়ার বাসুয়াড়ি এলাকার স্বামী পরিত্যক্তা রুমিচা বেগম। তাইতো হাজারো কষ্টের উপার্জিত টাকা আর টানাপোড়েনের সংসারের মাঝেও মেয়েকে পড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। মায়ের কষ্টের উপার্জিত টাকা বিফলে যেতে দেয়নি মেয়ে হাবিবা। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সন্তানের ভালো ফলাফলে উচ্ছ্বসিত মা রুমিচা বেগম। অন্যদিকে দারিদ্রতা ও অর্থাভাবে সন্তানের স্বপ্ন পূরণে কতটা পথ পেরুতে পারবেন এ নিয়েই চিন্তিত তিনি!

হাবিবা যশোরের বাঘারপাড়ার বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের রুমিচা বেগমের মেয়ে। সে মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। হাবিবা এর আগেও একই বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ ও বৃত্তি লাভ করেছিল। সমাপনীতেও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি ও ‘এ’ প্লাস পেয়েছিল।

হাবিবা খাতুন জানান, জন্মের পর থেকেই বাবা আমাকে আর আমার মাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন আর কোনোদিন খোঁজ রাখেনি। মামাদের ভিটায় থাকছি। ৮ম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্থানীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশন লেখাপড়ায় সাহায্য করেছে। স্কুলের শিক্ষক, আমার মা ও ‘এমবি থ্রি’ ফাউন্ডেশন আমাকে সাহায্য ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাদের এ সহযোগিতা বিফলে যায়নি। তাদের সহযোগিতা পেয়ে আমি সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি। পড়ালেখা করে আমি ডাক্তার হতে চাই।

হাবিবার মা রুমিচা বেগম জানান, অনেক কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব কিনা আল্লাহই জানে।

এমবি থ্রি ফাউন্ডেশনের বাঘারপাড়া এরিয়া ম্যানেজার সনিয়া খাতুন জানান, ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে হাবিবাকে যাবতীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও করা হবে বলে আশা রাখছি। অন্যদিকে হাবিবার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রতন কুমার দেবনাথ জানান, হাবিবা অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। অসুস্থ ও দারিদ্র্যতার মধ্যও ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর