ক্ষমতায় এলে ঢাকার বক্স কালভার্ট ভেঙে দিব: প্রধানমন্ত্রী

জেলা, জাতীয়

স্টাফ করেসপেন্ডন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 00:28:07

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের তো সময় শেষ, আগামী ডিসেম্বরে ইলেকশন। যদি আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারি তা আমার একটা লক্ষ্য থাকবে প্রত্যেকটা বক্স কালভার্ট ভেঙে ফেলে দেব। আশাকরি পর্যাপ্ত টাকা-পয়সা হবে আমাদের। আর ওই বক্স কালভার্ট ভেঙে খালগুলো উন্মুক্ত করে দেব। খালের উপর থেকে এলিভেটেড  রাস্তা হবে।

রোববার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা ওয়াসার ‘দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

২৫ আগস্ট ২০১৫ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকা ওয়াসার দাশেরকান্দি পয়ঃশোধানাগার প্রকল্প অনুমোদন দেয়। প্রতদিন ৫শ’ মিলিয়ন লিটার পয়ঃশোধনের ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্রকল্পটি খিলগাঁওয়ে নির্মিত হবে।

‘রাস্তা প্রয়োজন আছে, আমি অস্বীকার করিনা, রাস্তা লাগবে আমার, তাই খালের উপর যদি এলিভেটেড রাস্তা করি তাহলে আমাদের, রাস্তা থাকল, খালও থাকল, সুয়ারেজ সিস্টেমটাও ভালো থাকল।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্যা হবে। এই বন্যার সাথেই আমাদের বসবাস করা শিখতে হবে। বন্যার সঙ্গে থেকেও কিভাবে মানুষের ক্ষতি কমানো যায়, সে পরিকল্পনা নিতে হবে, খাল টাল বন্ধ করে হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকবে, আমার গরীব মানুষেরা থাকবে না, এটা আবার কেমন কথা? কাজেই তাদের জন্য ফ্ল্যাট তৈর করে দেওয়া হবে। বস্তি এলাকায় পানির ব্যবস্থা করছি। কিন্তু এখন যে দুরবস্থায় বস্তি আছে, ঢাকা শহরে এই ধরনের বস্তি থাকবে না। মানুষ কেন এই ধরনের মানবেতর জীবন যাপন করবে। তারাও তো মানুষ।’

বিভিন্ন কারণে এরা বস্তিতে এসে বসবাস করে একারণে প্রত্যেক এলাকায় বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে দিয়ে বস্তিবাসীদের অল্প টাকায় ফ্ল্যাটে থাকার প্ল্যান নেওয়া হয়েছে বলেও জানান।

তিনি বলেন, ‘যারা প্রতিদিন পয়সা উপার্জন করে তারা প্রতিদিনের ভাড়া প্রতিদিন দিতে পারবে। যারা সাপ্তাহিক ভাড়া দিতে পারবে, তারা সাপ্তাহিক ভাড়া দেবে। কেউ মাসে দিতে পারলে মাসে দেবে। যে যেভাবে চায়, সেভাবে থাকবে। এখানে ২০তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনে ফ্ল্যাট করে দেওয়া হবে। বস্তির একটি কামরায় সে যে ভাড়া দিয়ে থাকে ঠিক সেই ভাড়াই সে থাকতে পারবে। তারাও একটু ভালো জীবনযাপন করবে। সেই ব্যবস্থাটা আমরা কিন্তু করতে চাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ঢাকা না, এখন থেকে আমরা যে প্লানই করবো ঢাকা-জেলা উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্লান করে আমরা কাজ করব। ভবিষ্যতে যে উন্নতিটা হবে সেই উন্নতিটার ছোঁয়া যেমন উচ্চবিত্তরা পাবে, আমার এই নিম্নবিত্ত সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষও যেন পায়, সেটাই আমার লক্ষ্য। উচ্চবিত্তরা তো নিজেরাই ভাগ্য গড়ে নিতে পারে। কিন্তু যারা একেবারে নিচে পড়ে আছে, তাদের দিকে কে তাকাবে? আমার রাজনীতি তাদের জন্য, এ কথাটা মনে রাখতে হবে।’

‘কারণ জাতির পিতা এই সাধারণ মানুষের জন্যই রাজনীতি করে গেছেন। কাজেই আমার সব কাজে ওটাই লক্ষ্য।’

দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করতে চাই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে আমাদের এই ৪৭ বছর সময় প্রয়োজন হতো না। স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারতাম। তাই আজকে আমার একটাই লক্ষ্য, যে আশা নিয়ে যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে। বাংলার একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামে থাকা মানুষেরও জীবন মান উন্নত করে দেওয়া। তারা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। উন্নতভাবে বাঁচতে পারে। ’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জুও, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান। সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর