চট্টগ্রাম: পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ পালনের জন্য দেশে আসছেন প্রবাসীরা। বছরের পুরোটা সময় প্রবাসী কাটালেও ঈদের সময়টুকু পরিবারও সন্তানদের জন্য বরাদ্দ রাখেন অনেক প্রবাসী। ফলে বিদেশের যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু স্বস্তির খোঁজে পরিবারে কাছে ফিরেন তারা। অনেক দিন পরিবারের সঙ্গে না থাকা ব্যক্তিটি পরিবারের কাছে আসলেই ঈদের আনন্দটা পূর্ণতা পায়। ঈদের এই সময়টুকু ভাগ করে নিতে প্রবাসের ব্যবসা বাণিজ্যে বন্ধ করেই অনেকে চলে আসেন দেশে।
গতকাল সরেজমিনে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে গিয়ে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
কিছু প্রবাসী বছরের পুরো সময় বিদেশে অবস্থান করলেও ঈদ এলে ছুটে আছে নারীর টানে বাড়ির পানে। উদ্দেশ্য, ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করা। সন্তানের বায়না পূরণ করা। মা বাবার সান্নিধ্যে থেকে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করা।
গত ১৫ আগস্ট থেকে শাহ আমানত বিমান বন্দর দিয়ে প্রায় এক লাখ প্রবাসী চট্টগ্রামে আসেন। এদের মধ্যে অনেকের রিটার্ন টিকিট করে রেখেছেন, যারা অল্প কিছু দিন দেশে অবস্থান করার পর আবার প্রবাসে নিজের কর্মস্থলে ফিরে যাবেন। তবে এমন ব্যক্তি আছেন যারা রমজানের ও কোরবানির এই দুই ঈদেই বাড়িতে আসেন পরিবারের সাথে ঈদ করা জন্য।
সোমবার (২০ আগস্ট) সকালে সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে একটি ফ্লাইটে শাহ আমানত বিমান বন্দরে আসেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সাদেক হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর দুইটি ঈদ বাড়িতেই করি। মা বাবা ও পরিবারের সাথে ঈদ করা অনেক আনন্দের। যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
সৌদি আরবে ব্যবসা করেন জানিয়ে এই প্রবাসী বলেন, প্রয়োজনে ব্যবসা বন্ধ করেই বাড়িতে চলে আসি। রমজানের ঈদেও তাই করি। দীর্ঘ বিশ বছর পর্যন্ত তিনি এভাবেই ঈদ আনন্দ উপভোগ করেন বলেন জানান।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার মো. শাহ আলম এসেছেন ওমানের মসকাট থেকে। শাহ আলম বলেন, প্রতিবছরই ঈদের সময় বাড়িতে আসি। তবে রমজানের সময় আসতে পারিনা। আমি আসি কোরবানির ঈদে। পরিবারে স্ত্রী সন্তানরা পথ চেয়ে থাকে আমি কখন বাড়ি আসবো। তারা বিমান বন্দরে ছুটে আসে আমাকে রিসিভ করার জন্য।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছেন ঈদ করার জন্য। তিনি বলেন, শহরের মানুষ গ্রামে যায় ঈদ করা জন্য। আমরা প্রবাস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের ম্যানেজার সরওয়ার ই জাহান বলেন, গত কয়েক দিনে লক্ষাধিক প্রবাসী চট্টগ্রামে এসেছেন ঈদ করার জন্য। ঈদকে উপলক্ষ্য করে দেশে আসা প্রবাসীদের সংখ্যা সঠিক করে বলতে না পারলেও তা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ প্রবাসীরা বিভিন্ন ফ্লাইটে দেশে এসেছেন। আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, ইউকে থেকে প্রবাসীরা এসেছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী সংখ্যায় বেশী।
সরওয়ার ই জাহান বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ কাটানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। অনেকেই ঈদ করার জন্য ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করেই দেশে চলে আসেন ।
তিনি জানান, ঈদের ছুটিতে আসা প্রবাসীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য শাহ আমানতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে মালপত্র বুঝে পাওয়ার ব্যবস্থা করাও হয়েছে বলে জানান তিনি।